Tanaya Basu | Friday Fantastic | Satkahon Interview

Tanaya Basu | Friday Fantastic
বাঙালী ছোট বেলা থেকেই গান বাজনা শিখে বড় হয়ে ওঠে। প্রথম জীবনে মায়ের বা বাবার কাছে পরবর্তী জীবনে গুরুর ছায়ায় সঙ্গীতে তাঁর জীবন যাপন।
মেয়েদের সমস্ত জীবনটাই বড় অনিশ্চিত।
ছোটবেলায় মা বাবার এক উৎসাহে গান শেখা স্বপ্ন দেখা, এটা জেনেই যে পরবর্তী জীবনে অর্থাৎ স্বামীর ঘরে তাঁর এই স্বপ্ন নাও টিকে থাকতে পারে।
সংসারের চাপে অধিকাংশেরই স্বপ্ন মিশে যায় মাটির তলায়।
তবে,সমাজ এও দেখেছে যে কারও কারও ক্ষেত্রে স্বামী ও পরিবারের সহায়তা নারীকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
সঙ্গীতশিল্পী তনয়া বসু তেমনই একজন শিল্পী।
আজকের সাক্ষাৎকারে জানব তাঁর সঙ্গীত জীবনের গল্প।
গানবাজনার পরিবেশ থেকে বড় না হলেও মা বাবার একান্ত অনুপ্রেরণায় শিল্পীর গান শেখা।
বাড়ীতে পড়াশুনার পরিবেশ ছিল, সেভাবে কেউ গান না গাইলেও মা চাইতেন তনয়া গান শিখুন।
বাবা শিক্ষক ছিলেন এবং তিনি সঙ্গীতের পৃষ্ঠপোষক।
বাবার সাথে সাথেই রেডিও শুনে বড় হয়ে ওঠা তনয়ার।
বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ছাত্র অনির্বাণ রায়ের কাছে তাঁর গান শেখা।
মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়স থেকে তাঁর কাছে তনয়া শিখেছেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও নজরুলগীতি।
এছাড়াও জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অলোক রায়চৌধুরী,মানসী ঘোষ দস্তিদার, শ্রাবনী সেন, সুস্মিতা গোস্বামী প্রভূত গুনী মানুষের কাছে গান শিখেছেন তনয়া।
বর্তমানে তিনি অমৃতা চট্টোপাধ্যায় ও গৌতম ঘোষাল এঁর কাছে সঙ্গীত শিক্ষারতা।
পড়াশুনা চলতে চলতেই বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন তনয়া। তবে শ্বশুরবাড়ীতেও তিনি সাঙ্গীতিক পরিবেশ পেয়েছেন। ফলে পরিবার ও গুরুদের সাহচর্যে তিনি গান নিয়ে নতুন করে এগিয়ে যাবার কথা ভাবতে থাকেন।
দুনিয়া এখন ডিজিটাল। দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে প্রত্যেককেই গা ভাসাতে হবে সময়ের সাথে।
ক্যাসেট,সিডির যুগ পেরিয়ে এখন শিল্পীরা ইউটিউব চ্যানেলে ধরা দিয়েছেন।
ছোটবেলার প্রতিযোগিতা এখন টিকে থাকার লড়াইতে পরিণত হয়েছে।
সঙ্গীতশিল্পী তনয়া বসুর কণ্ঠে আসতে চলেছে ৫টি গান।
৫ টি গানের মধ্যে তিনটি বাংলা মৌলিক গান এবং দুটি বাংলা আধুনিক।
মৌলিক গান গুলি হল, ‘মেঘ মিনারে’, ‘কিছু কিছু ইচ্ছে যেন’, ‘আবীরে গুলালে মেখে’।
বাংলা মৌলিক গান নিয়ে শিল্পী প্রথম কাজ করছেন। বললেন,
“ নতুন গান নিয়ে সকলেই কাজ করছেন। আমাকে এই বিষয়ে সমস্ত রকম উৎসাহ দিয়েছে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী,জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক তাপস দত্ত মার্কো।“
এক সময় আকাশবানী রবীন্দ্রসঙ্গীত যুববিভাগে নির্বাচিত হয়ে দীর্ঘ সাত আট বছর সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন তনয়া।
স্মৃতির পথ হেঁটে শিল্পী বললেন,
“ আমি যে ছোটবেলায় গান গাইতে খুব ভালবাসতাম তা নয়। মা আমাকে জোর করেই প্রায় গান টা গাইয়ে নিতেন। মা নিয়ে যেতেন নানা অনুষ্ঠানে, প্রতিযোগিতায়। তবে এমন খুব কম হয়েছে যে কোন প্রতিযোগিতায় আমি বিফল হয়েছি বা কোন পুরস্কার পাইনি। এখন সেই সব দিন মনে পরে।
জীবনের নানা ঝড় ঝঞ্ঝায় গানই আমার বন্ধু হয়ে উঠেছে।
গান কিন্তু শুধুমাত্র চিত্ত বিনোদনের জন্যে নয়। অনেকখানি সাধনা জড়িয়ে থাকে সঙ্গীতের সাথে।
নতুন প্রজন্ম খুবই প্রতিভাশালী। তবে সকলকেই সকলের কাজ শুনতে হবে। প্রশংসা মানুষকে বৃহৎ থেকে বৃহত্তর পর্যায় উন্নীত করে। সমালোচনা তো হবেই, এর মাঝে মাঝে যদি আমরা একে অপরের একটু প্রশংসা করতে পারি তাহলে ক্ষতি কি? প্রার্থনা করি যেন সুস্থ গানবাজনার মাধ্যমে সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিবেশ, সুস্থ মানসিকতা যেন আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে আসে।“