Satkahon Review – ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি

Satkahon Review - ভূমিসুত নাট্যদল
ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in

Satkahon Review – ভূমিসুত নাট্যদল

চর্যাপদ ও কবিগন

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের আদিম নিদর্শন চর্যাপদ। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যাপদের একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন।

পুঁথি ঘিরে রয়েছে অসীম রহস্য।

চর্যাপদের কবিদের বলা হয় পদকর্তা বা সিদ্ধাচার্জ্য, মোট ২৪ জন পদকর্তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাম কান্হপা, ডোম্বিপা, লুইপা, শবরপা, ভূসুকুপা প্রমুখ।

নিগূঢ় অর্থবাহী সংক্ষিপ্ত বাকরীতিই এই পদ্গুলির বৈশিষ্ট্য।

Satkahon Review - ভূমিসুত নাট্যদল
চর্যাপদ – Satkahon.in

কিন্তু চর্যাপদের সময়কাল নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। চর্যাপদের দাবিদার নিয়ে বাংলা, অসমিয়া ও উড়িয়া ভাষার মধ্যে চলেছে দীর্ঘ লড়াই।

বাংলা ভাষা সৃষ্টি ও তার আদি সংগ্রাম এর ইতিহাসকে নাট্য রুপে তুলে ধরতে চেয়েছেন নাট্যকার জুলফিকার জিন্না এবং ভূমিসুত নাট্যদলের কর্ণধার তথা নাট্য পরিচালক স্বপ্নদীপ সেনগুপ্ত।

এই লড়াই যে ১৯৫২ এর ২১ শে ফেব্রুয়ারী থেকে নয়, কবি কান্হপার নেতৃত্বে এই সংগ্রামের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল হাজার বছর পূর্বেই, একাধিক চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে সেই কথাই তুলে ধরেছেন তাঁরা এই নাটকে।

Satkahon Review - ভূমিসুত নাট্যদল
ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in
Satkahon Review - ভূমিসুত নাট্যদল
ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in

‘কবি কান্হপা’র চরিত্রে এই নাটকে অভিনয় করেছেন গম্ভীরা ভট্টাচার্য, তাঁর অবর্তমানে পুর্নেন্দু ধর, ‘দেশাখ’ চরিত্রে কাজল শম্ভু,‘ডোম্বি’ চরিত্রে দেবযানী ঘোষ,তবে তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে সেই চরিত্রে অভিনয় করেছেন উজ্জয়িনী চট্টোপাধ্যায়, বর্তমানে এই চরিত্রে অভিনয় করছেন সমাদৃতা পাল।

মন্ত্রী রথীনার্জের ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন স্বনামধন্য অভিনেতা সমীর বিশ্বাস,বর্তমানে এই চরিত্রে অভিনয় করছেন দেবাশিস দত্ত। শবরী চরিত্রে অনন্যা পাল ভট্টাচার্য,পরবর্তিতে অভিনয় করছেন উর্বি।

এছাড়াও অভিনয়ে রয়েছেন শমীন্দ্রকৃষ্ণ দেব,দেবাশিস সেনগুপ্ত,অভিজিৎ গুহ,জ্যোতির্ময় ব্যানার্জী, রত্না মল্লিক,সুদেষ্ণা ত্রিবেদী,অনির্বাণ শিকদার,অজয় প্রধান,কৌশিক ওঝা, সৌরভ ধর ও আরও অনেকে।

মূল অভিনেতারা ছাড়াও ভূমিসুত নাট্যদলের অন্যান্য অভিনেতারা সমবেত অংশে তাঁদের অভিনয়ে প্রশংসার দাবি রাখেন।

মঞ্চসজ্জা করেছেন দেবব্রত মাইতি।

ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in

এক বছরে ১৪ টি মঞ্চ অনুষ্ঠান করেছেন তাঁরা। তপন থিয়েটার, মোহিত মৈত্র মঞ্চ, গিরিশ মঞ্চ, সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মঞ্চে একাধিক বার আমন্ত্রিত হয়েছেন

তাছাড়া ন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল, বাংলাদেশ সাভারে আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব, গঙ্গা যমুনা, গঙ্গা পদ্মা, বিভিন্ন নাট্যোৎসব এ পরিবেশিত হয়েছে চর্যাপদের কবি।

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বিভিন্ন নাট্য গবেষক ও বিশ্লেষকদের মতে বাংলা থিয়েটরে বাংলা ভাষার সংগ্রাম নিয়ে প্রথম নাটক পরিবেশন করল ভূমিসুত নাট্যদল।

আংশিক নৃত্য পরিচালনা করেছেন প্রসেনজিৎ বর্ধন ও কবীর সেন বরাট।

সম্পূর্ণ নাটকটি পরিচালনা করেছেন ভূমিসুত -এর কর্ণধার পরিচালক স্বপ্নদীপ সেনগুপ্ত

ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in

স্বপ্নদীপ, চর্যাপদের কবি নাটকের এই সাফল্য নিয়ে আপনার বক্তব্য কি?

“আমার মনে আছে শ্রদ্ধ্যেয় অতনু বর্মণ মহাশয়, জুলফিকার জিন্না মহাশয়ের সাথে ৩ বার বীরভূম থেকে এসে নাটক দেখে আবার ট্রেন ধরে মাঝরাতে বাড়ি ফিরেছেন।

গিরিশ মঞ্চে একবার নাটক ছিল, সেদিন Cricket wrold cup final, কিন্তু প্রেক্ষাগৃহে সেদিনও দর্শক উপচে পরেছে।

আসলে ‘চর্যাপদের কবি’ তো শিকড়ের কথা বলে, আজকাল আমাদের শিকড়কে ভুলে গিয়ে এগিয়ে যাবার যে তাড়না তাকে আবার গোড়ার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যায় এই নাটক।

আর তাছাড়া যা না বললেই নয়, তা হল সুদেষ্ণা ত্রিবেদী দিদি, আমার নাটক দেখে, বা আমার নাটক নিয়ে এই লড়াইকে সমর্থন করে, দেড় লক্ষ টাকা ভূমিসুত কে দেন, যার ফলে হয়ত আরও বেশি করে এই নাটক কে আমি সাজিয়ে তুলতে পেরেছি।

ওনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আর আমার দলের প্রত্যেকের অক্লান্ত পরিশ্রম এই নাটককে সাফল্য মণ্ডিত করে তুলেছে “

ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in

দীর্ঘদিন আপনি নাট্য পরিচালনার সাথে যুক্ত। থিয়েটর যা একান্তই একটি মঞ্চভিত্তিক উপস্থাপনা, এই মহামারী, বিপর্যয়ে মুখ থুবড়ে পরেছে, থিয়েটর কর্মীরা বিপর্যস্ত, এ প্রসঙ্গে আপনি কি বলবেন?

এই প্রশ্ন করা হল বলেই বলছি, নাহলে এ কথা বলা আমি সমীচীন বোধ করি না, থিয়েটর জগতের একজন হিসেবে আমি ও ভুমিসুত, বেশ কিছু নাট্যকর্মীদের সাহায্য করেছি

অনেকের টাকার অভাবে ডায়ালিসিস বন্ধ হয়ে গেছিল, আমরা এগিয়ে এসেছি সাধ্যমত।তবে থিয়েটর এর যে বিসয়বস্তু বা পরিবেশনা ,তাকে ডিজিটাল মিডিয়ায় আনা সম্ভব হয়ত নয়,আনলেও ঠিক কতটা ‘থিয়েটর’ থাকবে বলতে পারব না, তাই যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে আমি প্রসেনিয়াম থিয়েটর এর কোনো উন্নতি দেখছি না।

তবে একে ভেঙে ছোট ছোট আঙ্গিকে কাজ হতে পারে, আগামী দিনে আমাদের এই রকম দুটি নাটক আসছে, তা হল সমাদৃতা পালের নির্দেশনায় ‘উজান পাড়ি’, এবং আমার নির্দেশনায় ‘যন্ত্রণা’ ও ‘তিতির মৌ’।

সোশ্যাল দূরত্ব বজায় রেখেই এই নাটক পরিবেশন হবে।  

ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in

ডিজিটাল কাজ কি তাহলে একেবারেই করবেন না?

তা কেন? নিশ্চয়ই করব, আর করছিও, আমাদের খুব শীঘ্রই একটি কাজ আসছে, যার নাম ‘শুধু দুজনে’, সেটি মুলত একটি গল্প ভিত্তিক পরিবেশনা।

তবে চমক হল, সেই গল্প পাঠ করবেন একজন নারী ও একজন পুরুষ, গল্পের আবহ এমনই থাকবে যাতে চোখ বন্ধ করেও শ্রোতা সেটি কল্পনা করতে পারেন

এ ছাড়া দৃশ্যায়নে থাকবে আমাদের নিজেদের হাতে আঁকা ছবি।

তাই এমন না যে ডিজিটাল কাজ হবে না, তবে সব কিছুর যেমন নিজের একটা জায়গা রয়েছে,তেমনই থিয়েটর মঞ্চেই শোভা পায় এমনটা আমি মনে করি।

ভূমিসুত নাট্যদল ও চর্যাপদের কবি – Satkahon.in

SNEHA DAS | SATKAHON

COPYRIGHT © 2020 SATKAHON

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *