Satkahon Interview – Subham Paul | Editor | Fantastic Friday
Satkahon Interview – Subham Paul
সাংস্কৃতিক জগতে এখন অন্যতম প্রধান বিষয় “Video”.
কিন্তু শুধুমাত্র ভালো ক্যামেরায় একটি চিত্র গ্রহণ করাই শেষ কথা নয়।
এর সাথে জড়িয়ে আছে পরবর্তী বেশ কিছু অংশ। আর তার মধ্যেই অন্যতম প্রধান কাজ চিত্র সম্পাদনা।
ক্যমেরায় তোলা আবছা দৃশ্যকে পরিস্কার ভাবে ফুটিয়ে তোলা, যথাযথ রঙ নির্বাচন… কত কি!
বর্তমান প্রজন্মের কাছে বিশেষ ভাবে আকর্ষিত এই চিত্র সম্পাদনা বিষয়টি।
কিন্তু উপযুক্ত শিক্ষা এবং Set up না থাকলে এই কাজটি পূর্ণ রুপে সম্ভব নয়।
তবে কি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েদের আওতার বাইরে এই কাজ?
না। বলছেন চিত্র সম্পাদক শুভম পাল।
চিত্র সম্পাদনা প্রসঙ্গে আসার আগে জানতে চাই আপনি তো একজন পেশাগত ম্যাজিশিয়ান।
ম্যাজিকের প্রতি আগ্রহী হলেন কিভাবে? ম্যাজিক থেকে চিত্র সম্পাদনাতেই বা আসা কিভাবে?
সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশুনা করার সময় স্কুলের এক দাদার একবার ম্যাজিকের অনুষ্ঠান দেখি।
সেই থেকে ম্যাজিকের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয় আর মাজিশিয়ান দাদার সাথে যোগাযোগ করে আমি ম্যাজিক শিখতে শুরু করি।
একাদশ শ্রেণীতে পড়াকালীন আমি ম্যাজিশিয়ান এ সরকারের কাছে ম্যাজিক শিখতে শুরু করি।
তখন থেকেই পেশাগত ভাবে আমি নিজেও অনুষ্ঠান করছি।
সেখানে মৃত্যুঞ্জয় নামে এক দাদার সাথে আমার আলাপ হয় যিনি ম্যাজিকের পাশাপাশি সিনেমা পরিচালনার কাজে যুক্ত।
তাঁর সাথে সিনেমা, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে আলচনা সুত্রেই সেই সিনেমার প্রতি আগ্রহ তৈরি হল।
তখন তো উচ্চমাধ্যমিক, চাকরি সংক্রান্ত পড়াশুনা নাকি অন্য কিছু ভাবলেন?
ইচ্ছে ছিল সম্পূর্ণ ভাবে সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করব। কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে যা হয় প্রথমেই সকলে মানতে চান নি।
কিন্তু কোনরকমে সকলকে রাজি করিয়ে Arena animation institution এ আমি VFX শিখতে ভর্তি হলাম।
B.com ও পড়ছিলাম কিন্তু সিনেমা তৈরি এবং VFX আমাকে আকৃষ্ট এতটাই করেছিল যে পড়াশুনায় মন লাগছিল না। আমি B.com পড়তে পড়তে পড়া ছেড়ে দিলাম।
৭ মাস বাদে Arena তেও পড়া ছেড়ে দিতে হয়েছিল কিছু সমস্যার জন্যে। সেই সময় ভেবেছিলাম চাকরি করব, তাই পরের বছর আবার কলেজে ভর্তি হলাম।
বাড়িতে বসেই ইউটিউব থেকে নানারকম ভিডিও দেখতাম। একদিন হঠাৎই Video Edit বিষয় টা আমার চোখে পড়লো।
কলেজে তখন পরীক্ষা চলছে। বাংলা পরীক্ষা দেবার পর আমি আবার পড়া ছেড়ে দিলাম আর একদম সব কিছু ভুলে আমি সম্পাদনা শিখতে শুরু করলাম।
চিত্র সম্পাদনা কোথায় শিখেছেন?
শুরুর দিকটা আমি ইউ টিউব দেখে নিজেই রপ্ত করেছি।ম্যাজিশিয়ান অরিন্দম কর্মকার দাদার সাথে শিলিগুড়িতে আমার ম্যাজিকের একটা অনুষ্ঠানে যাই।
সেই অনুষ্ঠান থেকে পাওয়া সাম্মানিক দিয়ে আমি একটা ক্যামেরা কিনলাম।
ক্যামেরা কেনার পর নানারকম ম্যাজিকের অনুষ্ঠানের ভিডিও করতাম। তারপর সেগুলো এডিট করতাম। এইভাবেই ছোটখাটো কাজ দিয়েই শেখা শুরু।
একদিন মৃত্যুঞ্জয়দার সুত্রে আমার পরিচয় হল আমার গুরুদেব ও দাদা বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের সাথে।
বিশাল সাংস্কৃতিক জগতের সাথে আমি তখনও যুক্ত ছিলাম না। তাই বেশ ভয়েই ছিলাম। কিন্তু বিশ্বজিৎ দার সাথে কথা বলে আমার সব ভয় ঘুচে গেলো।
সেই থেকে দাদার কাছে আমার কাজ শেখা এবং দাদার পরামর্শেই দাদার সাথে কাজও শুরু।
শুধুমাত্র Video editing বিষয় নিয়েই আপনি বর্তমানে কাজ করেন। এই চিন্তাভাবনা কবে থেকে?
আসলে আমি কিন্তু Editing এর প্রতিই আগ্রহী ছিলাম।
ক্যামেরা কেনা বা ভিডিও করা এগুলো নিজের শেখার প্রয়োজনে করেছি।
বিশ্বজিৎদা Wedding photography ও Videography-এর সাথে যুক্ত।
কাজ শেখার জন্য়ে দাদার সাথেও ক্যামেরার কিছু কাজ করেছি অনেক কিছু শিখেছি ওনার থেকে।
প্রায় তিন-চার বছর শেখার পর আমি সম্পূর্ণ ভাবে Music Video, Wedding Video, Short film – editing এর কাজে চলে আসি।
আপনার প্রিয় কিছু উল্লেখযোগ্য কাজের কথা বলুন…
মিউজিক ভিডিওর মধ্যে আমার পছন্দের কাজ ‘Bekhudi’,’Mora Sainyaan’, ‘রঙ্গাবতী’।
এছাড়া বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী প্রশান্ত সমাদ্দার(মুম্বাই) এঁর একটি কাজ “Durgaa Maa”
আর স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য “Our Moments”. এই ছবির পরিচালনাও আমি করেছি।
আগামী দিনে আমার আরও অনেক কাজ আসছে।
Cinematography কিংবা Video Editing সব কিছুর সাথেই জড়িয়ে নানারকম Equipment ও Computer Set up. Institute এর পারিশ্রমিকও একটা বড়সড় খরচের আওয়াতায় পরে।
মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মানো অনেক ছেলেমেয়েই এইসবের অভাবে এই কাজ থেকে পিছিয়ে আসে। আপনি তাঁদের কি পরামর্শ দেবেন?
কাজ শুরু না করলে শেখা যায় না এটা এই জগতের বাস্তব সত্যি।
প্রথমে শিখতে তো হবেই। তবে শিখতে গেলেই যে বিশাল Set Up লাগবে এমন নয়। একটা Mobile দিয়েও কাজ শেখা যাবে।
এখন অনেক ভালো ভালো Software বেরিয়ে গেছে। আর আমাদের প্রত্যেকের কাছেই Smart Phone আছে।
আর সবার গুরু ইউটিউব তো আছেই।
শুরুতে এইভাবে কাজ শিখে তারপর যদি এই জগতে যারা দীর্ঘদিন কাজ করছেন তাঁদের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ শেখা যায় তাহলে শেখাও হবে আর আর্থিক একটা সচ্ছলতাও থাকবে।
আর নিজের স্বপ্নপূরণের খরচ নিজেই উপার্জন করে নেওয়া যাবে।
চেষ্টা, জেদ আর ভালোবাসা থাকলে সব সম্ভব।