Satkahon Interview – Spandan Banerji – Painter | নবীন চিত্রশিল্পী স্পন্দন

Satkahon Interview – Spandan Banerji - Painter

Satkahon Interview – Spandan Banerji – Painter

প্রযুক্তির হাত ধরে মানব সভ্যতা এগিয়ে চলেছে সহজ থেকে সহজের পথে… রঙ-তুলি উঠে এসেছে কম্পিউটারের ডিজিটাল পর্দায়।

সেখানে রঙের গন্ধ নেই, কিন্তু আছে আর্থিক সচ্ছলতা দেবার প্রতিশ্রুতি।

তবুও হারিয়ে যায়নি ভালোবাসা, হারায়নি সংস্কৃতিপ্রেমী মন।

আজকের কাহিনী তেমনই এক শিল্পীর, যিনি বয়সে নবীন হলেও শিল্পকর্মে-শিল্পচিন্তনে অভাবনীয় ক্ষমতাশালী।

নবীন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা চিত্রশিল্পী স্পন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। এক হাতে তাঁর রং-তুলি, অন্য হাতে প্রযুক্তি।

ভালোবাসা-না বাসার দ্বন্দের অবসান ঘটিয়ে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে অবশেষে তিনি MIT ADT (Art Design & Technology)-তে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাঁর Fine Arts বিভাগের পড়াশুনা।

Satkahon Interview – Spandan Banerji - Painter
HUMAN NATURE – By this artwork I have tried to show the connection between human beings and nature, how both inter connected. – SPANDAN

স্পন্দন, আপনার ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহ কি ছোটবেলা থেকেই? ছবি আঁকা শিখেছেন?

হ্যাঁ, ছোটবেলা থেকেই আমার ছবি আঁকার প্রতি একটা ভালোলাগা ছিল।

আমরা তখন থাকতাম OMAN-এ।

আমার তখন তিন কি চার বছর বয়স, বাবা আমাকে ভর্তি করেন আঁকা শিখতে।

জোসেফ স্যার এর কাছে আমার আঁকার হাতেখড়ি। ওনার কাছে আমি তিন চার বছর আঁকা শিখি।

আমার বয়স যখন ৬ বছর TAJ GROUP OF HOTEL, SOHAR,OMAN এর আয়োজনে একটা ছোটদের আঁকার প্রতিযোগিতা হয়।

সেখানে আমি সব থেকে ছোট ছিলাম প্রতিযোগীদের মধ্যে। ছবি আঁকার বিষয় ছিল ‘MOTHER’

আমি প্রথম স্থান অধিকার করি। সেই প্রতিবেদন OMAN এর বিখ্যাত পত্রিকা ‘OMAN TIMES’ এ প্রকাশিতও হয়।

তখন আঁকার প্রতি আগ্রহ আমার ভীষণ ভাবে বেড়ে যায়। কিছু বছর পর আমরা নাসিক চলে আসি।

Satkahon Interview – Spandan Banerji - Painter
MUSIC- This artwork tells us about how important music is in our life showing different instruments together. – SPANDAN

নাসিক আসার পর কার কাছে ছবি আঁকা শিখতে শুরু করলেন?

নাসিক আসার পর আমি সেভাবে কারো কাছে আঁকা শিখিনি। আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে কখনো কখনো সাহায্য নিয়েছি।

তখন নিজে নিজে ছবি আঁকতে শুরু করলাম। যা মনে আসত বা ভালোলাগত, আঁকতাম।

সেই সময় বেশ কিছু প্রতিযোগিতাতেও আমি অংশ নিই এবং পুরস্কৃত হই।

এমনকি মারাঠি একটি পত্রিকা ‘SAKAL’ এ আমাকে নিয়ে, আমার ছবি নিয়ে লেখা একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।

ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় আমি বরাবর প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় স্থান পেয়েছি এটা একটা অন্যরকম উৎসাহ দিয়েছে আমার জীবনে।

Satkahon Interview – Spandan Banerji - Painter
HEART BEAT- This artwork represents a heartbeat as it is the meaning of my name Spandan. – SPANDAN

কি ধরণের ছবি আঁকতে ভালোবাসেন?

Landscape painting দিয়েই আমি আঁকা শুরু করি। প্রথমে দেখে আঁকতাম, পরবর্তীকালে দেখে নিজের মনের মত করে আমি Landscape painting করেছি।

Portrait আঁকতে আমার ভালো লাগে না।

আমি বোধহয় আমার এখনকার সফরে দুটি কি তিনটি Portrait এঁকেছি।

আমি সব শিল্পীদের সম্মান করি কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয় Portrait যেহেতু সবটাই দেখে হুবহু আঁকতে হয় সেখানে কোথাও যেন শিল্পী মন বিকশিত হতে পারে না।

নতুন কিছু সৃষ্টির নেশাটা যেন চাপা পরে যায়।

ছবি আঁকার মাধ্যম হিসেবে কিসে আপনি সব থেকে বেশী স্বাছন্দ্য?

আমি শুরু করেছিলাম Water colors দিয়ে, এরপর ধীরে ধীরে Poster colors, Charcoal, Acrylic নানা রকম মাধ্যম ব্যবহার করি।

Satkahon Interview – Spandan Banerji - Painter
THE FOX- This artwork tells us about the feeling when we miss a close one. – SPANDAN (was published as cover pics in one US journals)

তখনও কি নিজেই শিখছেন?

না, বাবার সাথে আমেদাবাদ চলে আসতে হয়। আমি তখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি।

সেখানে দীপক স্যারের কাছে ১ বছর Canvas-এ Acrylic Painting শিখি।

ছবি আঁকা নিয়ে পড়াশুনা করার চিন্তা ভাবনা বা পেশাগত ভাবে ছবি নিয়ে এগোবার ইচ্ছে কি তখন থেকেই?

আসলে এরপর পরাশুনার চাপে আমাকে ছবি আঁকা থেকে একটু সরে আসতে হয়।

আর পেশাগত ভাবে যে আমি ছবি আঁকব সেটা আমি কখনো ভাবিনি।

কারণ ছবি আঁকা নিয়ে যে এতরকম পড়াশুনা হয় তা আমার জানাই ছিল না।

আমি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। বিদ্যালয় শেষের দিকে তখন এক বন্ধুর থেকে জানতে পারলাম আমেদাবাদে NID (National Institute of Designing) তে পরীক্ষা চলছে।

আমি একদমই কোন প্রস্তুতি ছাড়াই ভাবলাম পরীক্ষা দেবো। বাবার সাথে কথা বলে আমি পরীক্ষাও দিলাম।

কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই একদমই কিছু না জেনে, বিনা প্রস্তুতিতে পরীক্ষা দেওয়ার জন্যে কিছু নম্বরের হেরফেরে আমি ছিটকে গেলাম।

তখন আমি মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা করতে শুরু করলাম SRM UNIVERSITY,CHENNAI তে।

আসলে আমার বেশ কিছু বন্ধু সেই সময় মেকানিকাল পড়তে যায় আর আমার মনে হয়েছিল মেকানিকাল শেষ হবার পর আমি ‘Machine Design’ এ যাব।

কিন্তু ‘Machine Design আর Art Design যে আলাদা সেই বিষয়টা আমি বুঝতে পারিনি।

ARTWORK BY SPANDAN
ARTWORK BY SPANDAN

তাহলে পড়াশুনাটা কি একপ্রকার বাধ্য হয়েই চলছিল…

হ্যাঁ। কিছুতেই আমার মন সায় দিচ্ছিল না। যাইহোক কলেজের সংস্কৃতি বিভাগে আমি যুক্ত হয়েছিলাম ও সমস্ত সংস্কৃতিমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনে অংশগ্রহণ করতাম।

সেই সময় গিটার আর কিবোর্ড বাজাতে শিখেছিলাম।

কিন্তু যত দিন যাচ্ছিল আমি বুঝতে পারছিলাম এটা আমার জায়গা নয়। বাবা-মা কেও সেভাবে বলে উঠতে পারছিলাম না যে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে দিতে চাই।

নিজের মনে মনেই একটা অবসাদ কাজ করত।

 কিন্তু তৃতীয় বর্ষে আমি আর পারলাম না। পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ করে দিলাম। সেটা জানতে পেরে বাবা আমাকে চেন্নাই থেকে বাড়ি নিয়ে যান।

তারপর মেকানিকাল ছেড়ে আমি MIT ADT( Art Desing & Technology) তে ভর্তি হই।

ARTWORK BY SPANDAN
ARTWORK BY SPANDAN

বাবা-মা-পরিবার কতটা পাশে ছিলেন?

বাবা-মা অনেকটাই পাশে ছিলেন। আসলে শুরুর দিকে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল কারণ আমিই ঠিক ভাবে বোঝাতে পারিনি যে আমি ঠিক কি চাইছি।

বিষয়টা নিয়ে আমি নিজেও অতটা অবগত ছিলাম না।

পরে বাবা নিজেই বুঝেছিলেন আমি সংস্কৃতি জগতে যেতে চাইছি আর যখন আমি বাবা মা কে বললাম যে মেকানিকাল আমার পড়তে ভালো লাগে না, আমি যদি কোন চাকরিও পাই তাহলে সেই চাকরি করতেও আমার ভাললাগবে না।

তাই আমার যেটা ভাললাগে আমি সেটা নিয়েই এগোতে চাই।

ওনারা বোঝেন এবং আমাকে যথেষ্ট সমর্থন করেন। 

This week it’s MTV India! Watch to find out who finds #TheWayIn on this episode of LinkedIn-MTV #GetAJob Season 3. LinkedIn India

Posted by MTV India on Saturday, 27 May 2017

তাহলে অবশেষে নিজের পছন্দের জয় হল?

হ্যাঁ। আমি MIT ADT তে School of Fine Arts এ Aplied Arts নিয়ে পড়াশুনা করছি।

শিল্প তো অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ছাড়া শিল্পীকে সেভাবে আর্থিক সচ্ছলতা দিতে পারে না সবসময়। আপনি যে বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করছেন সেই বিষয় আপনাকে আর্থিকভাবে কতটা মজবুত করতে পারে?

দেখুন, শিল্পী মানেই যে তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার এমন কিন্তু নয়। যেকোনো প্রতিষ্ঠানই কিন্তু শিল্পের বুনিয়াদেই দাঁড়িয়ে।

কিন্তু চারুশিল্প যেমন ছবি আঁকা, সংগীত-নৃত্য ইত্যাদির সাথে যুক্ত হতে চাইলেই এটাই প্রথম চিন্তা হয়ে ওঠে রোজগার করব কিভাবে?

আমি মনে করি, সময় এখন অনেক উন্নত। যেকোনো কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও ভালোবাসা থাকে, একাগ্রতা থাকে তাহলে তার জয় হবেই।

তাছাড়া টেকনোলজির দৌলতে এখন একজন শিল্পী ওই শিল্প কেন্দ্রিক নানান কাজ করতে পারেন যা একদিকে তাকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করবে আবার অন্যদিকে তার শিল্প সত্ত্বাকেও নষ্ট হতে দেবে না।

Film Agency, Advertising Agency অনেক জায়গায় শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেই অর্থ উপার্জন করা যায়।

ARTWORK BY SPANDAN
NATURE – ARTWORK BY SPANDAN

আপনার কিছু উল্লেখযোগ্য কাজের কথা যদি বলেন…

মেকানিকালের প্রথম বর্ষে আমি প্রায় ৮০ টা মত ছবি এঁকেছিলাম বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে।

After the pause নামে একটি US Journal থেকে আমার দুটি ছবি প্রকাশিত হয়। একটি ওরা প্রচ্ছদ করে এবং অপরটি লেখার মধ্যে ছিল।

এছাড়া MTV আর Linkedin মিলিত ভাবে আয়োজিত GET A JOB প্রতিযোগিতায় আমি তৃতীয় হই। আমাকে একটা Short Film বানাতে হয়।

ওদের সেটা পাঠাই এবং MTV আমার একটা সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?

আমি আমার কাজ দিয়ে কিছু মানুষের ভালো করতে চাই। আমি চাই আমার শিল্প যেন অন্যের সাহায্যে আসে।

আমার শিল্প যেন মানুষের মনে জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে।

ARTWORK BY SPANDAN
LIVE FREELY- This shows how women should live freely without thinking about how the world judges them. -SPANDAN

স্পন্দন নিজের ইচ্ছে কে দমিয়ে রেখে বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছেন আপনি। আপনার মত অনেকেই আছেন যারা নানান কারণে নিজের ভালোলাগার বিষয় নিয়ে এগোতে পারছেন না। তাঁদের আপনি কি বলবেন?

আসলে মা বাবা কে ভয় পেয়ে, যে ওনারা হয়ত পাশে দাঁড়াবেন না, বুঝবেন না এটা মনে করে চুপ করে থাকাটা ভুল। বরং আমরা কি করতে চাই যদি আমরা তাঁদের সাথে আলোচনা করি, মনের কথা ভাগ করে নিই, তাহলে নিজের কাছে নিজে যেমন পরিস্কার থাকা যায়, তেমনই বাবা মাও একটু ভেবে দেখার সুযোগ পান।

কারণ বাবা-মা শুধু এইটুকুই চান যে আমরা যেন হাসি মুখে থাকি। তাই সবার আগে আমি কি ভাবছি সেটা পরিবার বা বাবা-মা কে জানান উচিত।

আমি খুব ভাগ্যবান যে আমি সকলের সমর্থন পেয়েছি নিজের পছন্দের বিষয়কে বেছে নিতে।

একটু ধৈর্য রেখে, একটু মনের জোর রেখে নিজের ভালোবাসাকে যদি আমরা প্রাধান্য দিতে পারি, যদি লড়াই করে হলেও নিজের সত্যিকারের ভালোবাসাকে জিতিয়ে দিতে পারি তাহলে ভবিষ্যৎ একদিন নিজেই রাস্তা খুঁজে দেবে সাফল্যের।

আর আমি মনে করি কোন কিছুর প্রতি প্রত্যাশা না রেখে কাজ করে যাওয়া উচিত। একদিন না একদিন শিল্প ঠিক তার প্রতিদান দেবে।

COPYRIGHT © 2020 SATKAHON

5 thoughts on “Satkahon Interview – Spandan Banerji – Painter | নবীন চিত্রশিল্পী স্পন্দন”

  1. Great realisation Spandan 👏👏👏.
    Your inspiring words will not only open the world of unknown to the generation of your age, but also enlighten few generations up and down.
    I feel proud that I know you.
    Take care and continue the journey forward with passion, courage and determination.
    All the very best.

  2. Wow! Spandan. Splendid work, awesome imagination, wonderful potrayal of each thought… keep it up! Way to go… may God bless you and you scale newer heights…

  3. Great going Spandan. Keep it straight and don’t worry about future – your passion will take you to great high. Will love to see more creative painting from you.

  4. Spandan , khuub bhalo laglo.
    অনেক অনেক ashirbaad kori onek baro hou. আরো অনেক shristi karo.
    Tomar , kotha gulo থেকে pochur anuprerona pelam , aar chesta korbo , আমাদের , bachcha der ke udbudhdho করতে.

    পারলে chandannagar er upor kono sristi koro.

    Monoda , amamder ju senior আর amio chandannagar er.

    ভালো theko

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *