Satkahon Interview – Ranjan Chakraborty | Scientist | Writter

Satkahon Interview – Ranjan Chakraborty
তিনি একাধারে বৈজ্ঞানিক, অন্যধারে প্রাবন্ধিক।
ভ্রমণপিপাসু কৌতূহলী মন ছুঁতে পারেনি তাঁর বয়স।
দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে সাতকাহনকে সাক্ষাৎকার দিলেন শ্রী রঞ্জন চক্রবর্তী।
সাহিত্যচর্চা কি নিজের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে নাকি পারিবারিক অনুপ্রেরণায়?
প্রত্যেক মানুষের জীবনেই ভালোলাগা তৈরি করতে পরিবার এক বিশেষ ভূমিকা নেয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই।
ছোটবেলায় কোথাও ঘুরতে গেলেই বাবা বলতেন সেই অভিজ্ঞতা খাতায় লিখে ফেলতে এবং বাবা সেটা দেখতেন।
একটা ভয় ছিল যা দেখলাম সবটাই যেন লিখতে পারি, কিছু বাদ না পরে যায় কারণ বাবা দেখবেন।
তাই মনোযোগ আর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা দুটোই একভাবে বিকশিত হবার সুযোগ পেয়েছিল।
মেলা, পুজো, যাত্রা যাই দেখতাম, লিখে ফেলতাম।
সেই থেকেই ডায়রি লেখার অভ্যেস।
এখন সেগুলো দেখলে পুরনো স্মৃতি মনে পরে।
আজকের সাথে কালকের সময়ের হের-ফের ধরা পরে।
পেশাগত ভাবে আপনি একজন অবসরপ্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক… বিজ্ঞান মানেই তো রহস্য…
পুকুরের জল ও মাটির সাথে মাছ কিভাবে সম্পর্কিত তাই নিয়েই ছিল আমার গবেষণা।
চাকরি সুত্রে নানা রকম বৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে লিখতে হয়েছে। তার মধ্যে একটি International Journal ও লিখেছি।
সেই গবেষণা নিয়ে লিখতে লিখতে আমার মনে হল এগুলো যদি বাংলায় লিখতে পারি, তাহলে অনেক মানুষ অজানা নানা বিষয় নিয়ে জানবে।
আমার প্রথম লেখার বিষয় ছিল আমেরিকা থেকে আমদানি করা এক নতুন প্রজাতির মাছ।
গল্পের নাম ছিল “সোনালি রুই”… প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজার পত্রিকায়…

এরপর কি কি লেখা প্রকাশিত হয়?
এর পর আফ্রিকার বাওবাব গাছ নিয়ে একটি লেখা প্রকাশিত হয় আনন্দবাজারেই।
বাওবাব হল এমন একটি গাছ , প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যার মূল কাণ্ডটি বিশাল। এমন একটি গাছকে ঘিরে ধরতে ২৫-৩০ জন মানুষের প্রয়োজন।
Krueger National Park এ দেখা গাছটির বয়স ৩০০০ বছর প্রায়।
আফ্রিকাতে যেখানে জলের অভাব সেখানে এই গাছ জন্মায়। গাছের ভিতরে থাকে জল।
জলের প্রয়োজনে মানুষ সেই গাছ কেটে ফেলে। কখনো কখনো হাতিও সেই গাছ ভেঙে জল ব্যবহার করে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভারতবর্ষের মান্ডুতে বেড়াতে গিয়ে আমি বেশ কয়েকটি বাওবাব গাছ দেখি।
আফ্রিকার মত অতটা বড় না হলেও ভারতবর্ষে এই গাছের উপস্থিতি আমাকে বিস্মিত করেছে।
এছাড়া কি কি লেখা রয়েছে?
আফ্রিকার চিল্কা লেক থেকে আনা এক্ট্রোপ্লাস নামে একটি মাছ নিয়ে লিখি।
মাছটির বংশবিস্তারের হার খুব কম।তাই অনান্য মাছের তুলনায় অতটা পরিচিতি পায় নিই।
গায়ে মুক্তোর মত দাগ থাকায় অনেকে মাছটিকে Pearls spot বলেও চেনেন।
এর পরেও নানা রকম পুজা সংখ্যায় আমার নানা রকম লেখা বেরিয়েছে এবং প্রতি বছরই বেরোয়।

এত অজানা বিষয়কে নিয়ে গবেষণা করেছেন, কখনো ইচ্ছে হয়নি বই প্রকাশ করার?
অনেকেই বলেছেন। বৈজ্ঞানিক জীবনের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, কিংবা পৃথিবীর নানা স্থানে ঘুরে বেরানোর অভিজ্ঞতা ইচ্ছে করে বই আকারে প্রকাশ করতে।
তবে বর্তমান দিনে পাঠকের সংখ্যা খুবই কমে গেছে।
নবীনরা বই বা পত্রিকা পড়ার চাইতে মোবাইলের জগতে বিচরণ করতে পছন্দ করে।
তাই সাহস পাই না।
নবীন প্রজন্মের উদ্দ্যেশে কোন বার্তা?
কৌতূহল নবীনত্বের প্রতীক।
যতক্ষণ কৌতূহল ততক্ষন যৌবন।
বিজ্ঞান হোক বা ভ্রমণকাহিনী, অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনাই আমাদের লক্ষ্য।
বই, পত্র-পত্রিকা বা ডিজিটাল দুনিয়া যাই হোক না কেন কৌতূহল মিটিয়ে নিতে হলে কিন্তু সবটাই পড়তে হবে।