Satkahon Interview – Kalyani Chakraborty -“সংস্কৃতির পথই একমাত্র মুক্তির পথ”
Satkahon Interview – Kalyani Chakraborty
একজন সন্তানের জীবনের প্রায় সবটুকু জুড়ে থাকেন মা। সেই যত বড়ই হোক না কেন মায়ের কাছে ছোটই থেকে যায়।
আজ সাতকাহনের সাক্ষাৎকার এক মায়ের। যিনি একদিকে যেমন নিজে তাঁর সন্তানকে বড় করে তুলেছেন সংস্কৃতি চর্চায়, তেমনই নিজেও সংস্কৃতি চর্চা করেছেন মায়ের অনুপ্রেরনায়।
তিনি সোদপুরের বাসিন্দা কল্যাণী চক্রবর্তী।
মা স্বর্গীয়া যমুনা ঘোষাল ছিলেন তাঁর জীবনের অনুপ্রেরণা।পেশাগত ভাবে তিনি ছিলেন শিক্ষিকা।
ছোট থেকেই সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি মায়ের হাত ধরেই। আবৃত্তি শিখেছেন মায়ের কাছে।পরবর্তীকালে শ্রী কার্তিক চন্দ্র রায়ের কাছেও তিনি আবৃত্তি শিক্ষা নেন।
এছাড়াও নাচ-গান দুই বিষয়েই দক্ষতা অর্জন করেছেন মায়ের অনুপ্রেরনায়।
বিদ্যালয় শেষ হতে না হতেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েন কল্যাণী। কিন্তু পড়াশুনা বন্ধ হয়নি। বিয়ের পরেই স্নাতক স্তরের পরীক্ষা শেষ করেন তিনি।
এর মধ্যেই তাঁর কোলে আসে এক কন্যাসন্তান এবং মারিয়া মন্টেসরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি পান কল্যাণী।
সংসার, সন্তান বা চাকরির চাপে সংস্কৃতিকে হারিয়ে যেতে দেননি তিনি। মেয়ে কে নিয়ে শুরু হয় তাঁর প্রথম অভিজান।
নিজের আবৃত্তি চর্চার পাশপাশি তিনি মেয়ে কে আবৃত্তি শেখাতে থাকেন। তাঁর অনুশীলনেই আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় একের পর এক পুরস্কার পেতে থাকে তাঁর মেয়ে।
কল্যাণী বলেন,
“আমার জীবনের সব থেকে গর্বের দিন ছিল সেদিন যেদিন আমার মেয়ে ১৭ টি জেলার মধ্যে আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়।
এছাড়া স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান নিয়ে উত্তীর্ণ হয় এবং গোল্ড মেডেল পায়।রাজ্যপাল উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং। তাই সেই দিনটি আমার কাছে অতীব মুল্যবান ও স্মরণীয়।
মেয়ে পুরস্কৃত হবার পর তাঁর মনে হয় এবার তিনি আবৃত্তি শেখাবেন। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই প্রতিষ্ঠা করেন নিজের প্রতিষ্ঠান।
আঁকা ও আবৃত্তি প্রশিক্ষনের উদ্যেশ্য নিয়ে শুরু হয় ‘দিশারি’।
শুধু আবৃত্তিতেই নন তিনি সঙ্গীতেও পারদর্শী। তিন বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতের তালিম নিয়েছেন।
শ্রী কেশব চন্দ্র দে, ভারতী কর চৌধুরী এবং পরবর্তীকালে বোন বনানী মজুমদারের কাছে গান শিখেছেন তিনি।
মারিয়া মন্টেসরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাৎসরিক অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধান করতে করতেই রাবীন্দ্রিক নাচের প্রতিও আগ্রহ তৈরি হয় তাঁর।
Zodiaz আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়ে মুক্তি পায় তাঁর দুটি কবিতার অ্যালবাম.
সবশেষে শিল্পী বলেন,
“আমি মনে করি সংস্কৃতি ছাড়া শিক্ষা পরিপূর্ণ রুপ পায় না। আগামী দিন গুলো সংস্কৃতির হাত ধরে বেঁচে থাকতে চাই।
জনপ্রিয়তা বা পরিচিতির ক্ষেত্রে সুবিশাল নাম অর্জন করতে না পারলেও আমি যেন ভালো কাজ করে যেতে পাড়ি।
সরলতাকে মুলধন করে এগিয়ে যেতে হবে কারণ সংসার জীবনে থেকে সংস্কৃতির পথই একমাত্র মুক্তির পথ। “