Satkahon – সবজান্তা তিন্নি – গল্প-৯ | বিমান মুখোপাধ্যায়

Satkahon – সবজান্তা তিন্নি – গল্প-৯
জানো বন্ধুরা? স্বনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী তথা সঙ্গীতশিক্ষক বিমান মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়, তাঁর শিল্পীজীবন শুরু হয় কিভাবে? উত্তরে তিনি বলেন,
“আমার পরিচয় আজও হয়েছে কিনা জানিনা। কারণ, গান করলেই শিল্পী হয়না। হয়, গায়ক। একটা গল্প বলি,
একদিন হঠাৎই আমার ছাত্রী মীরা দাসগুপ্ত এসে বলল সন্তোষ সেনগুপ্ত আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন।একটা চিঠিও দিলো।
আমি যেতে উনি আমাকে বললেন, নজরুলগীতির রেকর্ড হবে, আমাকে ট্রেনার হতে হবে। উনি আমাকে মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কাছে পাঠালেন।
আমি মানবের বাড়ি গেলাম, মানব আমাকে তাড়িয়ে দিলো। আমার তো খুব রাগ হয়ে গেলো। আমি সন্তোষ বাবুকে এসে বললাম আমি মানবের বাড়ি আর যাব না।
এরপর বাড়ি এসে আমার পারিবারিক ডাক্তারকে তা বলায় উনি বললেন, মানবকে আমি চিনি, আমি একটা চিঠি লিখে দিচ্ছি তুমি যাও।
আমি সবসময় ভালো কাজের প্রতিষ্ঠা চেয়েছি, তাই দ্বিধাদ্বন্দ্ব না করে ডাক্তার বাবুর চিঠি নিয়ে মানবের বাড়ি চলে গেলাম।
মানব আমাকে দেখে বলল, ‘আপনাকে একবার তাড়িয়ে দিলাম,তাও আপনি আবার এসেছেন? আচ্ছা আসুন।‘
টেবিলে এক কাপ চা। মানব কটাক্ষ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল ‘আচ্ছা আপনি কি গান জানেন একটু শোনান তো’…
আমি গাইলাম “কহো সাথী” আর “পরো পরো চৈতালি সাঁঝে”…
মানব আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল ‘আরে ভাই তোকেই তো খুঁজছিলাম’।
সঙ্গে সঙ্গে সন্তোষ দাসগুপ্তকে ফোন করে মানব বলল পরের দিনই সে রেকর্ড করতে চায়। সন্তোষ বাবু বললেন ট্রেনার পছন্দ হয়েছে তো?
উত্তরে সে বলল ‘আরে মশাই আমি খনি পেয়েছি খনি…’।
পরেরদিন সকলের রেকর্ড বাতিল করে মানব ৯ টা গান রেকর্ড করল।
তারপর তো ইতিহাস, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, হৈমন্তী শুক্লা, অনুসুয়া মুখোপাধ্যায়, শিপ্রা বোস বহু শিল্পী গান গেয়েছেন। তাদের কাছে আমি দাদা। খুব বকাও দিতাম ওদের।
আর সব থেকে বড় কথা কি জানো? ‘বিখ্যাত’ হতে গেলে ১০ টা গান যথেষ্ট, লক্ষ গান গাইবার দরকার নেই”

[ তথ্য সুত্রঃ আজকের সংবাদ বিভাকর পঞ্চ দশ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা, আগস্ত-সেপ্টে-অক্টো’ ০৩ | ছবি – আকাশ ]