Satkahon – সবজান্তা তিন্নি – গল্প ১৫ – চু চেন তাং
Satkahon – সবজান্তা তিন্নি – গল্প ১৫
বন্ধুরা, তোমরা তো জানো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম ‘ভানু সিংহ’। কিন্তু তোমরা কি এটা জানো যে তাঁর আরও অনেক ছদ্মনাম আছে?
সেগুলো হল, আন্নাকালী পাকরাশী, অকপটচন্দ্র লস্কর, দিকশুন্য ভট্টাচার্য, ষষ্ঠীচরণ দেবশর্মা, নবীন কিশোর শর্মণ, বানীবিনোদ বিদ্যাবিনোদ, শ্রীমতি কনিষ্ঠা, শ্রীমতি মধ্যমা।
এছাড়াও তাঁর আরও একটা নাম আছে বন্ধুরা। তাহলে শোনো,
১৯২৪ সালে কবিগুরু চীন দেশে বেড়াতে যান। সেইবার ২৫শে বৈশাখ চীনের পিকিং (বর্তমানে বেজিং) শহরে তো তখন হই হই কাণ্ড। কারণ সেদিন তো তাঁর জন্মদিন।
কবিগুরু তখন সদ্য সদ্য নোবেল পেয়েছেন।
ভারতবর্ষ থেকে তিনি গেছেন চীনের রাজ অতিথি হয়ে।
চীনের রাজ প্রাসাদে কবিকে ঘিরে তখন তুমুল আয়োজন।
নীল পাজামা, কমলা রঙের আলখাল্লা আর মাথায় বেগুনী টুপি পড়ে সাজলেন তিনি।
চীনের সম্রাট কবিকে উপহার দিলেন চারশো বছরের পুরনো এক ছবি।
চীন সরকার ভালোবেসে কবির নাম রাখলেন ‘চু চেন তাং‘।
চীনা ভাষায় এর অর্থ হল ‘ভারতের সূর্য’।
চীন দেশের এই আপ্যায়নে খুশী কবি লিখলেন কবিতা “জন্মবাসরের ঘটে”
—
জন্মবাসরের ঘটে
—–
নানা তীর্থে পুণ্যতীর্থবারি করিয়াছি আহরণ, এ কথা রহিল মোর মনে।
একদা গিয়েছি চিন দেশে, অচেনা যাহারা ললাটে দিয়েছে চিহ্ন ‘তুমি আমাদের চেনা ব’লে।
খসে পড়ে গিয়েছিল কখন পরের ছদ্মবেশ, দেখা দিয়েছিল তাই অন্তরের নিত্য যে মানুষ,
অভাবিত পরিচয়ে আনন্দের বাঁধ দিল খুলে।
ধরিনু চিনের নাম, পরিনু চিনের বেশবাস।
এ কথা বুঝিনু মনে, যেখানেই বন্ধু পাই সেখানেই নবজন্ম ঘটে।
আনে সে প্রাণের অপূর্বতা।
বিদেশী ফুলের বনে অজানা কুসুম ফুটে থাকে—
বিদেশী তাহার নাম, বিদেশে তাহার জন্মভূমি,
আত্মার আনন্দক্ষেত্রে তার আত্মীয়তা অবারিত পায় অভ্যর্থনা॥
বাংলা ভাষা,বাংলা সংস্কৃতির মধ্যে থেকেও আমরা বাংলার মানুষকে বা সংস্কৃতিকে কতটুকু জেনেছি ? অনেক গুণী ব্যক্তিদের জীবন কাহিনী আমাদের অনেকেরই অজানা। সাতকাহন সেই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়ে আজ আপনাদের দরবারে।শুধু তাই নয় বাংলায় এমন অনেক কাজ হচ্ছে বা এমন অনেক নতুন প্রতিভা রয়েছে যারা প্রচারের অভাবে সামনে আসতে পারছে না। সাতকাহন তাদের জন্য একটা বড় জায়গা রেখেছে এই নিউজ পোর্টালে।বাংলা সংস্কৃতি বিকশিত হোক, পুরাতনকে সমাদর করার পাশাপাশি নতুন কেও বরণ করে নেওয়া হোক সমান ভালবাসায়। এই অঙ্গীকার নিয়েই সাতকাহনের জয়যাত্রা।
Satkahon.in