Satkahon – সবজান্তা তিন্নি | গল্প-৬ | গুপ্তকবি ও যমক

Satkahon – সবজান্তা তিন্নি – গুপ্তকবি
কেমন আছো বন্ধুরা? আজ তোমাদের যার কথা বলব, এই বছর তাঁর ২০৮ তম জন্মবার্ষিকী।
তিনি হলেন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত। কেউ তাঁকে বলে গুপ্ত কবি, কেউ বলে ব্যঙ্গের কবি আবার কেউ তাঁকে চেনে ভ্রমণকারী বন্ধু নামে। তোমরা সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার নাম নিশ্চয়ই শুনেছ?
সংবাদ প্রভাকর ছিল ১৮৩১ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা, যেটিকে তিনি দৈনিক পত্রিকায় রূপান্তরিত করেন। পড়াশুনা করতে তাঁর আমার মতই একদম ভালো লাগত না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাঁর নেই বললেই চলে। কিন্তু তিনি ছিলেন অসম্ভব বুদ্ধিমান আর মেধাবী। তাই নিজের চেষ্টাতেই শিখে ছিলেন বাংলা সংস্কৃত ও ইংরাজি ভাষা। জানো বন্ধুরা? তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন এবং কবিগান বাঁধতেন। প্রায় বারো বছর গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে ঘুরে তিনি প্রাচীন কবিদের তথ্য সংগ্রহ করে তাঁদের জীবনী রচনা করেছেন। ঈশ্বরচন্দ্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো ভারতচন্দ্র রায়, রামপ্রসাদ সেন, নিধুগুপ্ত, হরু ঠাকুর ও কয়েকজন কবিয়ালের লুপ্তপ্রায় জীবনী উদ্ধার করে প্রকাশ করা।
আজকাল আমরা আমাদের কবিতায় গানে কতই না আধুনিক শব্দ ব্যাবহার করি, কিন্তু এর আগমন কিন্তু তাঁর হাত ধরেই, তিনিই প্রথম কবিতাই চটুল মজাদার শব্দ ব্যাবহার করেছেন। যেমন তোপসে, আনারস, পাঁঠা, আরও কত কি!
তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে নানারকম ব্যঙ্গ বিদ্রুপের কবিতা ছিল তাঁর প্রতিবাদের মাধ্যম। এছাড়াও তিনি যমক নামে এক ধরনের কবিতা আবিস্কার করেছিলেন। যেমন ধরো…
“আনা দরে আনা যায় কত আনারস” (১ম আনা= অর্থ, ২য় আনা= আনয়ন করা)
“প্রকাশিয়া প্রভাকর শুভ দিন দিন” (১ম দিন= দিবস, ২য় দিন= প্রদান করুন)
“কয় মাস খাও মাস উদর ভরিয়া” (১ম মাস= ৩০ দিন, ২য় মাস= মাংস)
একই পংতি তে একই বর্ণসমষ্টি একাধিকবার ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করা কে যমক বলে।
শত বছরের পুরনো এই মজার কাব্য আজ অবলুপ্ত। কিন্তু তোমরা যারা কবিতা লেখো… দেখোতো পারো কিনা এইরকম কিছু লিখতে…লিখলে আমাকে কমেন্ট করে জানিও কিন্তু…
আজ তাহলে চলি? আবার দেখা হবে অন্য কোন দিন!

COPYRIGHT © 2020 SATKAHON