Pt. Ramesh Narayan | Mukherjee Parar Jalsha | Satkahon

Pt. Ramesh Narayan | Mukherjee Parar Jalsha | Satkahon
নিজস্ব প্রতিনিধি
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মন্ডিত পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার অন্তর্গত প্রাচীন শহর শ্রীরামপুর।
বাংলা তথা ভারতের প্রথম ও দ্বিতীয় পাটকল (ওয়েলিংটন জুটমিল ও ইন্ডিয়া জুটমিল), এশিয়ার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় (শ্রীরামপুর বিশ্ববিদ্যালয়) এবং ভারতের দ্বিতীয় কলেজ (শ্রীরামপুর কলেজ), ভারতের প্রথম গ্রন্থাগার (উইলিয়াম কেরি লাইব্রেরি) এখানেই স্থাপিত হয়।
এমনকি শ্রীরামপুর মিশনের প্রতিষ্ঠিত ভারতের প্রথম কাগজকলও এই শহরে প্রতিষ্ঠা হয়।

মুখার্জী পাড়ার জলসা শ্রীরামপুরবাসীদের কাছে চিরকাল একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হিসেবে মান্যতা পেয়েছে।
গত ২৩শে জানুয়ারি, সোমবার এই শ্রীরামপুরেই অনুষ্ঠান করে গেলেন বিখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী পণ্ডিত রমেশ নারায়ণ (Pt. Ramesh Narayan)।
দক্ষিন ভারত তথা কেরালা নিবাসী জনপ্রিয় সঙ্গীতজ্ঞ পণ্ডিত রমেশ নারায়ণ কণ্ঠ সঙ্গীত শিল্পী হওয়ার পাশাপাশি চলচিত্রের পার্শ গায়ক এবং সঙ্গীত পরিচালক।
পদ্মভূষণ পণ্ডিত যশরাজের সুযোগ্য ছাত্র তিনি।
মুখার্জী পারার আসরে তাঁর সাথে সঙ্গীত পরিবেশনায় ছিলেন তাঁর কনিষ্ঠ কন্যা মধুশ্রী নারায়ণ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পন্দিতজী রাগ চারুকেশীতে মধ্যলয় ঝাঁপতাল ও দ্রুত তিন তালের দুটি বন্দিশ পরিবেশন করেন।
ভিন্নষড়জ রাগের বন্দীশ ও পরবর্তীতে বিখ্যাত ঠুমরী “ইয়াদ পিয়াকি আয়ে” গেয়ে মধুশ্রী সকলের বাহবা কুড়িয়েছেন।
অনুষ্ঠানের শেষে তিনি পন্ডিত জশরাজের বিখ্যাত ভজন “অধরম মথুরাম” পরিবেশন করেন।
রমেশজীর এদিনের সঙ্গতকারী হিসেবে ছিলেন সেতারে শ্রী সন্দীপ ব্যানার্জী,
সাইড রিদমে ছিলেন অলোক বিশ্বাস।
হারমোনিয়াম ও কিবোর্ডে সঙ্গীত পরিচালক কৌস্তব রানা সরকার অসাধারণ সহোযোগীতা করেন।
সর্বোপরি তবলায় শ্রীরামপুরের সকলের প্রিয় আদিত্য নারায়ণ ব্যানার্জী পন্ডিতজীর সাথে অপুর্ব সঙ্গত করে দর্শকদের বাহবা কুড়িয়ে নেন।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি যে আদিত্য, রানা এবং সন্দীপ টানা ৩৬ ঘন্টা পন্ডিত রমেশ নারায়নের কণ্ঠসঙ্গীতের সাথে সঙ্গত করে “লিম্কা বুক অফ রেকর্ড’-এ নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন।
এত সুন্দর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের একটা সাধুবাদ অবশ্যই প্রাপ্য।
শ্রীরামপুর নামটি সম্ভবত শ্রীপুর বা শ্রী রাম থেকে, অথবা এটি সীতারামপুর থেকে সৃষ্টি।
কারণ সেখানে একটি খুব বিখ্যাত ‘রাম-সীতা’ মন্দির ছিল।
শ্রীপুরে কিছু সম্ভ্রান্ত পল্লী যথা গোস্বামীপাড়া, লাহিড়ীপাড়া, মুখার্জীপাড়া, ভট্টাচার্যপাড়া, চক্রবর্তীপাড়া, বেণিয়াপাড়া ইত্যাদি আছে, যার অধিবাসীরা বিভিন্ন গোষ্ঠী ও শ্রেণির ব্রাহ্মণ।
১৮ এর শতকে শ্রীপুর, গোপীনাথপুর, মনোহরপুর গ্রামগুলিকে নিয়ে একত্রে শ্রীরামপুর গঠিত হয়।