Aditya Paul – Videographer | Fantastic Friday | Satkahon Interview

Aditya Paul – Videographer

Aditya Paul – Videographer

শেওড়াফুলির ছোট্ট ছেলেটিকে এখন এক ডাকে চেনা যায় তাঁর নামে। হাতে ক্যামেরা নিয়ে সে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলা।

লক্ষ্য কিন্তু তাঁর অনেক দূরের… কেমন তাঁর Videography আপনারা যারা এই লেখা পড়ছেন সকলেই জানেন,

তাই আজ শুনব তাঁর বড় হয়ে ওঠার গল্প…

সাতকাহনের সাক্ষাৎকারে আজ আদিত্য পাল।

ছোট বেলা থেকেই কি স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে Videographer হবেন বা এই জগতে আসবেন?

না একদমই ভাবিনি। ছোটবেলায় বাবা কে দেখেছি পাড়ার অনুষ্ঠানে শখের থিয়েটর করতে।

আমিও ছোটখাটো ভুমিকায় নাটকে অভিনয় করেছি। তখন ভাবতাম বড় হয়ে থিয়েটর করব।

মাধ্যমিকের পর থেকে পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাই। তখন ধীরে ধীরে সেই ভাবনাটাও পাল্টাতে থাকে।

উচ্চমাধ্যমিকের পর ইচ্ছে হল ছবি তুলবো বা এই Cimenatography এর জগতে আসব।

তাহলে কি এই বিষয় নিয়েই পড়াশুনা শুরু করলেন?

সেই রকমই ইচ্ছে ছিল। বাবা কে বললাম যে আমি এটা নিয়েই পড়তে চাই। কিন্তু বাবা রাজি হলেন না।

বললেন, আগে কলেজের পড়াশুনা শেষ করে নিতে তারপর দেখা যাবে। আমি তাই Electrical engineering পড়তে শুরু করলাম।

আসলে সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে যেমন হয় যে আমরা শখটা কে বড় করে ভাবতে পারিনা নানা প্রতিকূলতার জন্যে তাই আমিও বাবার কথাটাই মেনে নিলাম।

তাহলে এই জগতে প্রবেশ কিভাবে? সেই গল্পটা শুনি…

পড়াশুনায় আমার একদম মন ছিল না। ছবি তোলার শখটা বেশ জাঁকিয়ে বসেছিল। কলেজের প্রথম সেমিস্টার দিয়েছি তখন দিদি জন্মদিনে আমাকে ক্যামেরা কিনে দিলো।

Nikon এর একদম সাধারণ একটা DSLR নিয়ে আমার যাত্রা শুরু হল। তখন আমি পড়াতাম। পড়িয়ে ৪০০ টাকা দক্ষিনা পেতাম। সেটা জমিয়ে জমিয়ে আমি একটা Prime Lens কিনলাম।

এই ভাবে চলতে লাগল। তখন সাহেব দা বলে এক দাদা আমাকে বলল ভাই আমি একটা ইউটিউব চ্যানেল শুরু করছি তুই কি আমাকে ভিডিও করে দিবি?

আমি বললাম নিশ্চয়ই।

সেই আমার প্রথম কাজ।

তখন Colour correction করতে পারতাম না তাই Black & White ভিডিও বানিয়েছিলাম।

মাধ্যমিক পাস করার পর গেম খেলার জন্যে একটা কম্পিউটার কিনেছিলাম সেটাতেই এডিট করতাম।

তখন থেকেই কি পেশাগত ভাবে কাজ শুরু করেছেন?

না, বেশ কিছু দিন যাবার পর আমার বন্ধুরা বলল তুই ভালো কাজ করছিস, তাহলে কেন টাকা নিয়ে কাজ করিস না?

আমি প্রথমে একটু ইতস্তত করেছিলাম কারণ আমি নিজে নিজে শিখে কাজ শুরু করেছি সবে আমার মনে হয়েছিল আমার টাকা নেওয়ার মত দক্ষতা অর্জন হয়নি।

কিন্তু সবাই অনেক বোঝাল।কেউ জিজ্ঞেস করলে আমি বলতাম যা ইচ্ছে দেবেন।

প্রথম পেশাগত ভাবে একটা ভিডিও করি ২০০০ টাকার বিনিময়ে।

‘ভালো কাজ’ শুরু হল কবে থেকে? যাকে বলে First Break…

আমি ভগবানে খুব বিশ্বাস করি। কপাল ভালো ছিল ঈশ্বরের আশীর্বাদ

যে প্রথম দুতিনটে কাজ করার পরই সারেগামাপা খ্যাত এক শিল্পী দাদা আমাকে বললেন তাঁর একটি ভিডিও করে দিতে হবে সেটা একটি নামকরা চ্যানেল থেকে মুক্তি পাবে।

সেটা আমার কাছে একটা বড় Oprtunity ছিল।

২০১৮ সালে আমার পরিচয় হল সৌরদীপ্ত চৌধুরীর সঙ্গে। আমি ওনাকে বললাম যে আমি ওনার সাথে কাজ করতে চাই।

দাদা আমাকে ডাকলেন এবং আমাকে বোঝালেন ক্যামেরার নানান দিক সম্বন্ধে।

তখন আমি বুঝলাম সেই পর্যায়ের ভালো কাজ করতে গেলে এই ছোট্ট ক্যামেরায় হবে না।

বাবা কে এসে বললাম।

বাবা কি বললেন?

আবারও সেই ভাগ্যের ফের।

এবার বাবা বললেন, তোর ছোট থেকে অনেক শখ শেষ অবদি টেকে নি, এই বার তোকে ক্যামেরা কিনে দিচ্ছি দেখব তুই এটা টিকিয়ে রাখতে পারিস কিনা।

বাবা যদি সেই সময় আমাকে সাহায্য না করত তাহলে হয়ত আমার কিছুই করা হত না।

যাইহোক, আমি সৌরদীপ্ত দার সাথে অবশেষে কাজ শুরু করলাম। প্রায় এক বছর আমি দাদার সাথে কাজ করেছি আর অনেক কিছু শিখেছি।

জীবনে কাদের পাশে থাকা আপনাকে আপনার লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করেছে বলে মনে করেন?

অনেকেই রয়েছেন।

তবে বড় হওয়ার পথে যারা সব থেকে বেশী পাশে ছিলেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আমার বাবা, মা, দিদি, সাহেব চৌধুরি, রুপক তিয়াড়ী, সৌরদীপ্ত ঘোষ, আর আমার ছোট বেলার বন্ধু পল্লবী দাস।

এনারা পাশে না থাকলে আমি হয়ত আজ এই জায়গায় আসতে পারতাম না।

নিজের আলাদা ভাবে কাজ করার কথা কবে মনে হল? পড়াশুনা তো তখনও চলছে?

ওই এক বছর বাদে দাদার সাথে কাজ করতে করতে আমার মনে হল আমি এবার নিজে কাজ করতে পারব আমি করতে চাই।

যেমন এই মুহূর্তে ট্রামলাইন বলে আমাদের একটি নতুন কাজ শুরু হয়েছে বাংলা গান নিয়ে।

পড়াশুনা কোন রকমে করতে হয় তাই করেছি।

চাকরির জন্যে বাড়ি থেকে কেউ জোর করেনি?

না। এমনকি ক্যাম্পাসিং এর মেইল আসত আমি উত্তর দিতাম না। বাবা দেখার আগে ডিলিট করে দিতাম।

অবশেষে কলেজ থেকে ফোন করে বাবা কে।

বাবা বলেছিল আমার ছেলে যেটা চায় সেটা করবে। আমি কিছু বলব না।

এখন তো আদিত্য পাল মানেই একের পর এক ‘ভালো কাজ’… নিজের সব থেকে পছন্দের কাজ কোনটা?

অবশ্যই ‘শান্ত দুপুর’। আমি সব সময়ে ভিন্ন ধরণের কাজে বিশ্বাসী।

একটা সাধারণ বিষয় কে অন্যরকম করে দেখাতে পারাটাই একজন শিল্পীর দক্ষতা।

শান্ত দুপুর গানের ভিডিওতে কিন্তু কোন গল্প নেই।

কিন্তু কেন মানুষ ৩ মিনিট সময় নিয়ে এই ভিডিও দেখবে সেটা ভিডিওই বলে দেবে।

আমার মনে হয় কলকাতায় এই ধরণের কাজ হওয়া দরকার।

কারণ এই ধরণের কাজ মানুষকে বাংলা গান নিয়ে ভাবাতে বাধ্য করবে।

নতুন যারা কাজ করছে বা আপনাকে মেনে চলার চেষ্টা করছে তাঁদের কি বলবেন?

আমি যতটুকু শিখেছি দেখে শিখেছি।

তাই এটা ভাবলে হবে না আমি সব পারি।

কেউ যদি তোমার ভুল টা দেখিয়ে দেয় তাহলে সেটাকে বিচার করার বা মেনে নেওয়ার ক্ষমতা রাখতে হবে।    

COPYRIGHT © 2020 SATKAHON

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *