Abhisek Chatterjee – Photographer & Cinematographer | Satkahon
Abhisek Chatterjee – Photographer & Cinematographer
শিল্প তার নিজ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত।তাকে বয়ে নিয়ে যাবার দায়িত্ব একজন শিল্পীর। শিল্প যদি বৃক্ষ হয় শিল্পী তবে মধুপ..
কিন্তু বর্তমান এই প্রতিযোগিতা এবং ধনী-গরিবের যুদ্ধে শিল্পী কি তাঁর প্রকৃত মর্যাদা পান?
না, বরং অর্থের দাঁড়িপাল্লায় মেপে শিল্পের ও শিল্পীর যোগ্যতা বিচার করা হয় প্রতি মুহূর্তে।
টুকরো টুকরো জীবন গল্পে সাতকাহনকে তাঁর অভিজ্ঞতা জানালেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়…
শিল্পী পরিবারে জন্ম না নেওয়া শিল্পীদের মধ্যে আপনি একজন। কেমন ছিল ছোটবেলা?
পেশাগত ভাবে শিল্পী না হলেও মা গান গাইতেন, দাদু ছিলেন রবীন্দ্রসমালচক।
আমি ছোট থেকে ছবি আঁকতাম। চিত্রশিল্পী হবার ইচ্ছে ছিল। বাবা মা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও আমার মামা আর্ট কলেজের ছাত্র ছিলেন, ছবি আঁকতেন।
ওনার থেকেই ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহ উৎসাহের জন্ম, প্রথমটা ওনার থেকেই শেখা। অন্য কারোর কাছে আর শেখা হয়ে ওঠেনি।
কিন্তু ৩ বছর বয়স থেকেই আমার ছবি আঁকার প্রতি এমনই এক অদম্য প্রেম ছিল যে..
আমি ঠিক করেছিলাম উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর আমিও আর্ট কলেজে ভর্তি হব এবং এই বিষয়ে পড়াশুনা করব।
তাহলে তারপর কি এই নিয়েই পড়াশুনা করলেন? স্বপ্ন পূরণ হল?
মধ্যবিত্ত পরিবারে স্বপ্ন শব্দটাকে আসে পাসে ঘেঁসতে দেওয়া হয় না।তবুও আমরা স্বপ্ন দেখি।
আর ভগবান বলে যদি কেউ থাকেন তাহলে এত মানুষের ভিড়ে তিনি বেছে বেছে কিছু স্বপ্ন দেখা মানুষের চোখ অন্ধকারে ঢেকে দেন।
এটা আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।
পরের গল্পটা বলি,
মাধ্যমিক পাস করে সবে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছি, বাবার ক্যান্সার ধরা পড়লো। আমি একমাত্র সন্তান।
রেলওয়ে হসপিটালে দিন রাত ছোটাছুটি, রাতে সেখানে থাকা এই করতে করতে বেশ কয়েকদিন স্কুলে যাওয়া আসা বন্ধ হয়ে গেলো।
হেড মাস্টার মশাই কে সমস্ত কাগজ জমা দিয়ে অনুরোধ করেছিলাম আমাকে যেন একটিবার পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়।
উনি বলেছিলেন ক্যান্সার তো তোমার বাবার হয়েছে তোমার স্কুলে না আসার কারণ কি?
গুরু নিন্দে মহাপাপ কিন্তু ওনার বোধহয় জন্ম থেকেই শিক্ষক বোধ ছিল, সন্তান বোধ থাকলে এই প্রশ্ন উনি করতেন না। যাইহোক পড়াশুনা করা হল না।
এরপর?
এক বছরের মাথায় বাবা মারা গেলেন। পারিবারিক পেনশন চালু হতে ৬ মাস লেগে গেলো।
সেই ৬ মাস সংসার চালাবার জন্যে পার্ট টাইম চাকরি করতে শুরু করলাম।
এরপর আমি গাড়ির ব্যাবসা শুরু করলাম। ব্যাবসা ভালোই চলছিল। রেলে চাকরি পেয়েছিলাম করিনি।
ঔদ্ধত্ত ছিল, চাকরি করে আর কত রোজগার করব?
হঠাৎই গাড়ির ব্যবসায় শুরু হল মন্দা। ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হলাম।
মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে প্রায় ১ বছর আমি নিজেকে একটা ঘরে বন্দী করে ফেলেছিলাম।
জীবনে সময় দুঃসময়ের এই যুদ্ধে জেতার গল্পটা জানতে ইচ্ছে করছে… এখন তো আপনি একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী..
দেখুন শিল্পীরা নিজেকে কখনোই কোনদিনই প্রতিষ্ঠিত বলতে পারেন না। সবটাই লড়াই।
আমি সেই সময় খবরের কাগজে চাকরি খুঁজছি, হঠাৎই Third-eye এর একটি বিজ্ঞাপন দেখি। কর্ণধার অতনু পাল। আগে চিনতাম অল্প।
আমি ওনাকে ফোন করলাম। ওনার ডাকে আমি বিড়লা আকাদেমি তে একটি চিত্র প্রদর্শনীতে যাই। এই ভাবে ধীরে ধীরে আমি নানান প্রদর্শনীতে যেতে শুরু করি।
ডিসেম্বর মাসে সরকার বাগানের একটি প্রদর্শনীতে আমি প্রদর্শনী পরিচালনার কাজে যুক্ত হই। এর পর দুর্গাপুরের একটি প্রদর্শনীতেও আমি পরিচালনার কাজে যুক্ত হই।
১৩ দিন পর যখন ফিরলাম তখন অতনুদা আমাকে ডেকে বললেন Third-Eye তে যুক্ত হতে। কিন্তু আমার ক্যামেরা কেনার সামর্থ্য ছিল না।
জানিনা কি ভাগ্য করেছিলাম উনি নিজে আমাকে একটি ক্যামেরা কিনে দেন।
যতসামান্য পারিশ্রমিকে উনি আমাকে কাজ শিখিয়েছেন। তখন থেকেই আমি Photography শুরু করলাম।
কি কি কাজ করেছেন ও করছেন?
Third eye তে আমি প্রায় চার বছর কাজ করেছি।
আনন্দবাজার, Telegraph পুজো পরিক্রমা, আজকের সম্পুর্না, long journy, hungry, উত্তমা ইত্যাদি ম্যাগাজিন এ দীর্ঘদিন কাজ করেছি photographer হিসেবে।
Wedding Photographer, Food Photographer হিসেবে কাজ করেছি দীর্ঘদিন।
শিবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অতনু পাল আমার জীবনের অনুপ্রেরণা।
Fashion Photofraphy, portfolio নানা কাজে জড়িয়ে গেছি।
একক ও মিলিত ভাবে আমার চিত্র প্রদর্শনীর সংখ্যা প্রায় ৫১ টি।
এই সময় সঙ্গীতশিল্পী মহুয়া ব্যানার্জীর সাথে আমার প্রথম Music Video এর কাজ হল। আর আমি cinematographyr জগতে প্রবেশ করলাম।
Cinematographer হিসেবে আমি প্রতাপ ঘোষ, নীলার্ঘ্য ব্যানার্জীর সাথে কাজ করেছি।
এর মধ্যে Short Film ও করতে শুরু করলাম। আমার ও আমার স্ত্রীর মিলিত পরিকল্পনায় গড়ে উঠেছে আমাদের প্রযোজনা “সুত্রম ইন্ডিয়া”।
সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রানী সূর্যতপা এবং আমার মিলিত প্রযোজনা “মেহফিল”।
এই ভাবেই পেশাগত ভাবে একক কাজের শুরু।
সুত্রম ইন্ডিয়া ও মেহফিল এর বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে শুনতে চাই…
আমার স্ত্রী রিয়া চট্টোপাধ্যায় ও আমার মিলিত প্রযোজনা সুত্রম ইন্ডিয়া।
Photography, Make up যাবতীয় বিষয় নিয়ে সুত্রম কাজ করে।
আর মেহফিল আমি এবং ইন্দ্রাণীদির মিলিত প্রযোজনা। Music video সংক্রান্ত যেকোনো বিষয় নিয়ে মেহফিল কাজ করে।
Audio Recording ও Video এর One stop solution বলা যায়।
ব্যক্তিগত জীবনের লড়াই এবং শিল্পী জীবনের লড়াই এর উপর ভিত্তি করে সমাজ কে কি বার্তা দেবেন?
Freelancer হিসেবে কাজ করেছি অনেকদিন, অনেকের সাথে। অনেক সময় পুরো বিষয়টা একা পরিচালনা করার পরও সেই কাজে আমার নাম দেওয়া হয়নি।
ভিডিওতে কখনো ছোট করে দেওয়া হলেও হয়ত কোম্পানি আমার নাম উল্লেখ করেনি।
এমন অনেক রকম ভাবে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি।
অভিজ্ঞতা থেকে আমি এই উপলব্ধিতে এসেছি যে শিল্পের কোন মূল্যায়ন হয় না।
পেটের দায়ে শিল্পের মুল্য নির্ধারন করতে হয়।
এখন শিল্পই অনেক বড় ব্যবসা কিন্তু ব্যবসা করার উদ্দেশ্য নিয়ে শিল্পী তৈরি হয় না।
একজন চিত্র শিল্পী যখন ছবি আঁকে সে কিন্তু ৫০০ টাকায় আমার ছবি বিক্রি হবে ভেবে আঁকে না, তাই সে শিল্পী।
শিল্পীকে টাকা দিয়ে কেনা যায় না, অর্থ আবশ্যিক, কিন্তু অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে শিল্পী শিল্প করেন না।
তাই তাঁদের সামাজিক সম্মানটা একটু অন্য হওয়া উচিত। আশা করব, মানুষ শিল্প ও শিল্পীকে অর্থ দিয়ে বিচার করবেন না।
Very Inspiring .
Ashadharon excellent.
Good replies in return of this question with firm arguments and describing everything about that. Celestyn Marco Soraya
Very quickly this website will be famous among all blogging visitors,
due to it’s nice articles or reviews 0mniartist asmr