দেবেন্দ্রনাথ ও তাঁর জুতো | Sobjanta Tinni – গল্প ১৯ | Satkahon

দেবেন্দ্রনাথ ও তাঁর জুতো | Sobjanta Tinni – গল্প ১৯ | Satkahon

দেবেন্দ্রনাথ ও তাঁর জুতো | Sobjanta Tinni – গল্প ১৯ | Satkahon

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় নানাভাবে উঠে এসেছে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সখ-শৌখিনতার কথা।

বিলাত ভ্রমণ করতে ভালবাসতেন দ্বারকানাথ ঠাকুর। বিলাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে তাঁর পুত্র দেবেন্দ্রনাথ সেই সময় ব্রাম্ভ ধর্ম গ্রহণ করেছেন পিতার অমতে।

পিতার সাথে এই কারণেই তাঁর মনোমালিন্য। দ্বারকানাথের মৃত্যুর পর তাঁর সমস্ত ঋণ এসে পড়ল দেবেন্দ্রনাথের উপর।

বিষয়-আশয় বিক্রি করে শোধ করলেন সেই ঋণের বোঝা।

এমনকি পিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া লক্ষাধিক টাকার চাঁদাও তিনি বছরের পর বছর ধরে শোধ করেছেন।

সেই সময় বাবুয়ানা নিয়ে কলকাতার ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে চলত একটি চাপা রেষারেষি।

এমত অবস্থায় এক জলসা উপলক্ষে শোভাবাজার রাজবাড়ী থেকে এলো আমন্ত্রণ।

দেবেন্দ্রনাথের পিতৃঋণ শোধ করার খবর কলকাতার অনেক নামিদামি ব্যক্তিরাও জানতেন।

তাঁরা বলতে লাগলেন- দেখাই যাক প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের পুত্র কী সাজে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসেন। এই খবর হাওয়ায় ভেসে মহর্ষির কানেও এল।

Read More

তিনি অতি বুদ্ধিমান মানুষ। ডাক পড়ল করমচাঁদ জহুরির।

হুকুম হল – আসল মুক্তোদানা দিয়ে একজোড়া মখমলের জুতো বানিয়ে দিতে হবে।

ফরমাসমতো সেই জুতো তৈরি হয়ে এলো ঠাকুরবাড়ি ।

নির্দিষ্ট দিনে দেবেন্দ্রনাথ দামি দামি জরি চুমকির কাপড় বাদ দিয়ে পরলেন সাদা ধুতি পাঞ্জাবি।

মাথায় বাঁধলেন সাদা মোড়াসা পাগড়ি।

 তখনকার দিনে সকলে নিমন্ত্রণে যেত কাটা কাপড় পরে, ধুতিপাঞ্জাবি কেউই পরত না।

সেই জলসায় যেখানে সবাই দামি দামি রত্ন অলঙ্কার আর জরি-কিংখাবের পোশাকে সজ্জিত হয়ে আছেন, সেইখানে দেবেন্দ্রনাথের সাধাসিধে সাজ দেখে অনেকেই একটু বাঁকা হাসি হেসেছিলেন।

কিন্তু যেই দেবেন্দ্রনাথ তাঁর মুক্তাখচিত পাদুকাযুগল একটু বের করে একটা কৌচে বসলেন, সকলের চক্ষুস্থির হয়ে গেল।

 আর তা দেখে দেবেন্দ্রনাথের বন্ধু শোভাবাজারের রাজা বললেন-

“…একেই বলে বড়োলোক। আমরা যা গলায় মাথায় ঝুলিয়েছি ইনি তা পায়ে রেখেছেন।”  

 COPYRIGHT © SATKAHON

তথ্যসুত্র – প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় -রবীন্দ্র জীবন কথা এবং Google.com

চিত্র ঋনঃ Pinterest

বিশেষ ধন্যবাদঃ স্নেহাংশু রায়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *