রবিগানে অদ্বিতীয়া জয়তী, গাইলেন “তুমি তো সেই যাবেই চলে”- Satkahon

রবিগানে অদ্বিতীয়া জয়তী, গাইলেন “তুমি তো সেই যাবেই চলে”- Satkahon
তাঁর গান শুধু গান নয়…তাঁর কথা… ৮০ বছরের দীর্ঘ জীবনে যা বলেছেন তাই তাঁর গান… সুখ দুঃখ হাসি কান্না বিরহ… সব কিছুতেই তাঁর গান তাঁর কথা আমাদের জীবনলতা বেয়ে প্রান স্পর্শ করে… বিরহের নদী যখন দুখের কুয়াশায় ঘিরে ফেলে সমস্ত পথ তখন তিনি ডাক দেন ওপার থেকে… সুর শুনে শুনে কাঙাল পরান যেন সমস্ত আঁধার ঠেলে এগিয়ে যায় তাঁরই পানে, তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর…
স্বনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তীর কণ্ঠে আবার যেন প্রান পেলো তাঁর গান “তুমি তো সেই যাবেই চলে”।
পরমাত্মীয় আবেদন,ঐশ্বরিক এক অভিনয় শক্তি তাঁর কণ্ঠে, তাই যখন তিনি গাইলেন “চোখের জলে দুখের শোভা নবীন করে দেবো রাখি…” , দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পরেনি চোখ দিয়ে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন…
২২শে শ্রাবণে কবি যখন তাঁর আপামর সৃষ্টি আমাদের সঁপে দিয়ে অনন্তলোকে যাত্রা করলেন তখন তাঁর কথাই আবারও আমাদের কথা হয়ে উঠে এলো… “তুমি তো সেই যাবেই চলে”
বেঁধে রাখা কাউকেই সম্ভব নয়, এমনও তো হয় এই জীবন থাকতেও দুটি মানুষ একে অপরের কাছে এসে সরে যায় সহস্র যোজন দূরে… হয়ত কোন বেদনায়ময় বাঁশির টানেও তারা ফিরে আসে না একে অপরের কাছে!
তখন “ আমার বেদনখানি আমি রেখে দেবো মধুর ক’রে” বলা ছাড়া হয়ত কোন উপায় থাকে না…
রবিগানের সমস্ত আবেদন জয়তী তাঁর কণ্ঠে সাজিয়ে তুলেছেন… তাই তিনি অদ্বিতীয়া… তাঁর গান লক্ষাধিকবার শুনলেও তাই সাধ মেটে না…তিনি বললেন,
“মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছি,কিছুদিন আগেই হারিয়েছি আমাদের সকলের মনের মানুষ মহুয়াদি কে… এখন বুঝি… চিরদিনের বলে বোধহয় কিছুই হয় না… রবীন্দ্রনাথ সেই কথাই যেন বলে গেছেন তাঁর এই গানে… নিজের জীবনের বেদনা দিয়ে আমি তাঁর গান কে অনুভব করেছি…
তাই হয়ত কণ্ঠে গানের বাস্তব রুপটা গাইবার সময় ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। প্রিয়জনের চলে যাওয়ার পরের মুহূর্তের যে বেদনা তার থেকে বড় বেদনা বোধহয় কিছুতেই নেই… কবিগুরু আমাদের সকলের প্রিয়জন,সুখে দুখে আমাদের একমাত্র আপন কেউ…তাই তাঁর চলে যাওয়ার দিনে তাঁকে এবং আমার সকল প্রিয়জন যারা চলে গেছেন তাঁদের স্মরণ করেই আমার এই গান।”
গানটির দৃশ্যায়নে স্বয়ং অভিনয় করেছেন জয়তী, তবে এই অভিনয় শুধু বাহ্যিক বলা যাবে না, কারণ তাঁর কণ্ঠের অভিনয়ের কাছে তা অতি সামান্য।
গানের সঙ্গীতায়োজন করেছেন বিশিষ্ট সরোদবাদক শ্রী প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়। গানে সরোদ সঙ্গতও করেছেন তিনি।
সামগ্রিক ভাবে এই গানের সঙ্গীতায়োজন যেন প্রানে শান্তি আনে… যেন নিজেকে নিজে বুঝিয়ে দেওয়া যে সবই অস্থায়ী তাই নিজের বেদনা ফুলের সাজির মত সাজানো থাকুক নিজেরই হৃদয় জুড়ে… বরাবরের মতই শ্রী প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গীতায়োজনে আমরা এক মুগ্ধতা পেয়েছি… যেন ২২শে শ্রাবণে স্নিগ্ধ সাদা বেল…জুঁই খোঁপায় বেঁধে, শুভ্ররঙা শাড়িতে রবিবন্দনা…এবারও তার অন্যথা হয়নি।
গানটিতে গিটার সঙ্গত করেছেন রাজা চৌধুরী এবং বাঁশি সঙ্গত করেছেন বুবাই নন্দী। গানটির সামগ্রিক ভিডিও ডিজাইন করেছেন অপেক্ষা লাহিড়ী।
চিত্রগ্রহণ করেছেন শুভদীপ। ভিডিও সম্পাদনা করেছেন হিরন্ময় বিশ্বাস। গানটি মুক্তি পেয়েছে আশা অডিওর ওই টিউব চ্যানেল থেকে।
COPYRIGHT © 2020 SATKAHON