রঙ ছাড়া রঙিন ছবির ১২ বছর – তপন সাহা | ২২-২৩-২৪ জানুয়ারি | Satkahon
রঙ ছাড়া রঙিন ছবির ১২ বছর – তপন সাহা
কোলাজ চিত্রশিল্পী তপন সাহা। রঙ ছাড়া রঙিন ছবি তাঁর হাতের খেলা।
ভারতবাসীর কাছে তিনি কোলাজ সম্রাট।
দৈনিক ১৫-১৬ ঘণ্টার পরিশ্রম ও প্রায় তিনমাস সময় লাগে তাঁর একটি কোলাজ ছবি তৈরি করতে। নিপুন দক্ষতা, আন্তরিক এক ভালোবাসা জড়িয়ে থাকে তাঁর প্রত্যেকটি কাজে।
২০০৮-২০২০, কোলাজ জীবনের ১২ বছরের সম্পদ-স্মৃতি মিলিয়ে আগামী ২২-২৩-২৪ কারবালা মোড়, হুগলীতে হতে চলেছে তাঁর এক অভিনব প্রদর্শনী।
৪৮০০ বর্গ ফুট জায়গা জুড়ে তাঁর কোলাজ চিত্রের এই প্রদর্শনী আয়োজন করেছেন চুঁচুড়া আরোগ্য।
জীবনের একটা সময় দিয়েছেন টেরাকোটা শিল্পে। পোড়ামাটির রঙে এনেছেন বৈচিত্র্য। কিন্তু ২০০৮ থেকে শৈশবের রঙিন পোস্টকার্ড কেটে বানানো কোলাজ ছবিকে তিনি দিলেন পূর্ণতার স্পর্শ।
বললেন, “একসময় চোখ রঙ খুঁজে বেড়াতো উনুনে মাটি দিয়ে, আর এখন সেই চোখ রঙ খোঁজে কাগজে কাগজে।“
সুখী গৃহকোণে (মাসিক পত্রিকা) প্রকাশিত হয়েছে তাঁর চারশোর অধিক ইলাস্ট্রেশন।
কোলাজ চিত্রের সংখ্যা ৭৩-এর ও বেশী।
আন্তর্জাতিক স্তরের ‘কলানিধি’ পুরস্কার, রাজস্থান সরকারের ‘RUDA’, ভারত সরকারের M.C.P, রাজ্য সরকারের STATE AWARD ছাড়াও একাধিক পুরস্কার তাঁর ভান্ডারে।
প্রদর্শনীতে ছবি বিক্রির হার কেমন জানতে চাওয়ায় বললেন এক কাহিনী।
“একবার খুব শখ হয়েছিল আত্মজীবনী লেখার। বাংলাতে লিখেওছিলাম বেশ খানিকটা। তবে তার ইংরাজি অনুবাদের প্রয়োজন ছিল।
তাই এক ইংরাজি সাহিত্যের অধ্যাপকের দারস্থ হই। তিনি অনুবাদের বদলে আমার থেকে ওনার প্রাপ্য দাবী করায় আমি ওনাকে আমার একটি বাঁধানো কোলাজ ছবি উপহার দেওয়ার কথা বলি।
বদলে উনি বলেন, ‘ওসব ছবি-টবি দিয়ে কি হবে আপনি বরং আমাকে একটা সোফা সেট দেবেন‘।
তাহলে একজন শিক্ষিত, মার্জিত মানুষ যদি একটি শিল্পের প্রতি এই রকম মত পোষণ করেন তাহলে কি ভাবে আমি নির্দ্বিধায় বলব ছবি বিক্রি হবেই?
শিল্পী যদি শিল্পের সম্মানই না পান তাহলে তাঁর পরিশ্রমের মুল্যই বা দেবে কে? তবে একথাও মানতে হবে, যাঁদের থেকে তথাকথিত ভাবে সম্মান পাবার আশা করিনি তাঁরা আমাকে অগাধ সম্মান দিয়েছেন।“
২২-২৩-২৪ জানুয়ারি কারবালা মোড়, হুগলীতে এই প্রদর্শনী দেখতে যেতে হবে অবশ্যই। প্রবেশ থাকছে অবাধ।