বাগনান শিল্পী সংঘ আয়োজিত সরস্বতী পুজো – SATKAHON REVIEW

বাগনান শিল্পী সংঘ আয়োজিত সরস্বতী পুজো – SATKAHON REVIEW
সায়ন দে
যত দিন যাচ্ছে সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে বাঙালীর সাংস্কৃতিক উন্মাদনা বেড়েই চলেছে।
সারা বাংলায়, বিশেষে করে হাওড়া জেলায় পাড়ায় পাড়ায়, ক্লাবে স্কুলে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেভাবে ও যে হারে বাগদেবীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে তা সত্যিই নজিরবিহীন।
প্রায় প্রত্যেক বিদ্যালয়ে নিজস্বতায় ভরা ছিল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের সরস্বতী উপাসনা।
কিন্তু সৃজনশীল ভাবনায় এগিয়েছিল জেলার বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনগুলি।
এমনই একটি সংগঠন হল হাওড়া জেলার বাগনানের এন. ডি. ব্লকের শিল্পী সংঘ, যারা এবারে তাদের সরস্বতী পুজোর ২১তম বর্ষে আয়োজন করেছিল ‘দেবী মুক্তি প্রদায়িনী আরাধনা উৎসব’।

মণ্ডপের থিম ছিল – ‘গাছ আমাদের বন্ধু’।
সবুজ রঙে মোড়া সমগ্র মণ্ডপটি টবে বসানো গাছ দিয়ে সাজানো, আর প্রতিমার পিছনে নারী মুক্তির নানা বার্তা পোস্টারে ছিল সাজানো।
তাই তাদের ভাবনা দেবী মুক্তি প্রদায়িনী। বিষয় বৈচিত্র্যের অনন্যতায় এখানেই থেমে থাকেনি তারা।
পুজোর দিন থেকে টানা চারদিন ধরে তাদের মণ্ডপ সংলগ্ন মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল নজর কাড়া সব প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠান।



প্রথমেই যেটা নজর কেড়েছে তা হল –
এরা এদের সীমিত সামর্থ্য নিয়েই বাগনান শহরের মধ্যে আয়োজিত সরস্বতী ঠাকুর ও মণ্ডপ পরিক্রমা করে সেরা ভাবনার পুজো আয়োজকদের পুরস্কৃত করেছে।
তাছাড়া, ছোটবড় অঙ্কন শিল্পীরা মিলিত হয়ে পরিবেশ প্রকৃতির নানা সংকটের দিক নিয়ে নিজেদের ভাবনায় হাতে এঁকে তৈরি করেছিল
একাধিক পোস্টার, যা সমগ্র মণ্ডপে প্রদর্শিত হয়েছিল, সেখানে উঠে এসেছিল নারী নির্যাতন,
সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতা, বিশ্ব উষ্ণায়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, গাছ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ইত্যাদি একাধিক বিষয়।
নাচ, গান, অঙ্কন, আবৃত্তির পাশাপাশি ছিল নিরামিষ রন্ধন প্রতিযোগিতা।

ছিল কবি সম্মেলন।
যেখানে ত্রিশ জনের বেশি কবি হাওড়া জেলার নানা প্রান্ত থেকে এসে কবিতা পাঠ করেছিলেন।
ছিল এলাকার গুণীজনদের সম্বর্ধনা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

যেহেতু শিল্পী সংঘের কর্ণধার চিত্রশিল্পী সৈকত খাঁড়া নিজে একজন অত্যন্ত সৃজনশীল মানুষ,
তাই তাঁর নেতৃত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান ও উৎসবের সমস্তকিছু জুড়েই ছিল সৃষ্টিশীলতার ছোঁয়া।
এলাকার শিশু কিশোর কিশোরীদের সুস্থ সংস্কৃতি ও সৃজনশীল মনভাব গঠনের পরিমণ্ডল গড়ে দেওয়াই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য বলে জানালেন সৈকত বাবু।
শিল্পী সংঘের সভাপতি বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক ও শিল্পী মাননীয় মধুসূদন বাগ মহাশয় সকল অতিথি ও গুণীজনদের নিজস্ব ঢঙে আতিথেয়তায় ভরিয়ে দেন।