ঠাকুরবাড়ির খাওয়াদাওয়া | সবজান্তা তিন্নি | গল্প- ২০ | Satkahon

ঠাকুরবাড়ির খাওয়াদাওয়া | সবজান্তা তিন্নি | গল্প- ২০ | Satkahon
বন্ধুরা, ঠাকুরবাড়ির খাওয়া দাওয়ার গল্প নিয়ে আমরা সকলেই কৌতূহলী।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের তৃতীয় পুত্র হেমেন্দ্রনাথ ও পুত্রবধূ নৃপময়ীর মেজো মেয়ে প্রজ্ঞাসুন্দরী ছিলেন রান্নাবান্নায় অসামান্যা।
শুধু তাই নয়, এক একটি রান্নার এক এক রকম নাম ও দিতেন তিনি।
তাঁর তৈরি সমস্ত রান্নার অদ্ভুত নাম।
যেমন, দ্বারকানাথ ফিরনি পোলাও, রামমোহন দোল্মা ভাত, সুরভী পায়েস ইত্যাদি।
একবার নববর্ষে তাঁর রান্নায় যুক্ত হল আরও একটি নতুন পদ।
শীতশেষের ফুলকপি, খোয়া ক্ষীর, বাদাম-কিসমিস, জাফরান আর সোনা-রূপার তবক দিয়ে তৈরি বরফি। তিনি তার নাম দিলেন ‘কবি-সংবর্ধনা বরফি’
এই বাদাম জাতীয় মিষ্টি ছিল কবিগুরুর প্রিয় মিষ্টি।
নববর্ষের দিন ঠাকুর বাড়িতে কি কি রান্না হত শুনলে তোমরা অবাক হবে বন্ধুরা…
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির টানা বারান্দার মেঝেতে কার্পেটের আসন লম্বা করে বিছিয়ে তার সামনে কলাপাতা ঘিরে মাটির খুরিতে খুরিতে সাজানো থাকতো—
কাঁচা ইলিশের ঝোল, চিতল মাছ আর চালতা দিয়ে মুগের ডাল, নারকেল চিংড়ি, মাছের পোলাও, আম দিয়ে শোল মাছ এবং দ্বিজেন্দ্রনাথের প্রিয় খাবার পাঁঠার হাড়ের অম্বল…
ঠাকুরবাড়িতে পাকা আম ভাতে, পাকা পটলের টক, কাঁচা ও কচি তেঁতুলের ঝোল, বেগুন ও কাঁচাকুলের টক, তিল বাটা দিয়ে কচি আমড়ার অম্বল রান্না হত।
মৃণালিনী দেবী পাকা আমের মিঠাই বানাতেন। শেষ পাতে দই ও সন্দেশ অপরিহার্য ছিল। মিষ্টির নানারকম নামও দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
একবার একটি মিষ্টি খেয়ে নাম দেন ‘এলোঝেলো’, পরে বদলে রাখেন ‘পরিবন্ধ’।
CLICK TO JOIN: SATKAHON NEWS FACEBOOK GROUP
শান্তিনিকেতনে থাকার সময় স্ত্রীকে মানকচুর জিলিপি তৈরি করতে বললেন কবি।
মৃণালিনী প্রথমে আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু খেয়ে দেখা গেল সেটা জিলিপির চেয়ে ভালো হয়েছে।
কবি বললেন, “দেখলে তোমাদের কাজ তোমাদেরই কেমন শিখিয়ে দিলুম।”
কবিপত্নী হেসে বললেন “তোমার সঙ্গে পারবে কে? জিতেই আছ সকল বিষয়ে।“
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৌহিত্র মোহনলাল লিখছেন, লাইব্রেরী থেকে রান্নার বই বার করে রীতিমত রান্নার ক্লাস শুরু করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ।
রাঁধুনি রাধুকে নিয়ে চলত রান্নার নতুন নতুন পরীক্ষা।
প্রচলিত প্রথাকে বদলে দিয়ে পেঁয়াজ প্রথমে ভাজার হলে তাকে শেষে ভাজতেন।
শেষে সাঁতলাবার জিনিস প্রথমেই সাঁতলাতেন।
যাকে ভাজতে হবে তাকে সেদ্ধ করতেন।
এই প্রথাতেই ‘মুরগির মাছের ঝোল’ আর ‘মাছের মাংসের কারি’ আবিষ্কার করেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
তথ্যসুত্রঃ আন্তরজাল