জীবন জয়ের গল্প – সৌমেন মুখোপাধ্যায় | Jibon Joyer Golpo | Satkahon

জীবন জয়ের গল্প - সৌমেন মুখোপাধ্যায়
Jibon Joyer Golpo | Satkahon

জীবন জয়ের গল্প – সৌমেন মুখোপাধ্যায়

এটাকে জীবনজয়ের গল্প বলা যায় কিনা জানিনা, তবে জীবনযুদ্ধের গল্প তো বটেই।

গল্পের শুরু আশির দশকের একটু কাছাকাছি সময়।

মাধ্যমিক পাশ করার পর, বাবা বললেন, ছেলের পরবর্তী পড়াশোনার জন্য কিছু করতে পারবেননা।

অগত্যা, দিদা-ই আশ্রয়। মায়ের দিক চিরকালই সাংস্কৃতিক ভাবাপন্ন। মা ছিলেন স্বর্গত শ্রীমতী দীপালি নাগচৌধুরীর ছাত্রী।

বাড়িতে তবলা ছাড়া আর কোনও উপকরণ নেই।

সংসারের চিন্তা থাকলেও, অনেকটা বয়সেই শুধুমাত্র গানের জন্য ভর্তি হই শ্রীমতী মালতী মুখোপাধ্যায়ের কাছে। 

এই সময়ের কাছাকাছি, স্নাতক হওয়ার পরপরই, ১৯৮৫-তে প্রাইভেট কোম্পানির ২৭৫টাকা মাইনের কাজ।

যথারীতি, গান শেখারও ইতি।

এর মাঝেই শরীরকে অবহেলা করে ব্যবসা দেখতে গিয়ে এক বছরের মধ্যে বাবা দু’বার হাসপাতালে ভর্তি হলেন। তারপর, ১৯৯৬-এর ৮ই অগাষ্ট, বাইশে শ্রাবণ, বাবা চলে গেলেন।

শুরু হলো, মা, বোনকে নিয়ে আমার নতুন যুদ্ধের অধ্যায়। 

এরই আগের এক আশ্চর্য ঘটনা…

SATKAHONNEWS@GMAIL.COM

‘জীবন জয়ের গল্প’ বিভাগে আপনার শিল্প জীবনের গল্প mail করুন আমাদের। আমরা পৌঁছে দেবো সেই গল্প সকলের কাছে।

যে বাবা কোনওদিনই চাননি তার ছেলে সাংস্কৃতিক জগতে যাক, সেই তিনিই ‘এফ.এম.উপস্থাপক’-এর ঘোষণাটি লিখে রেখেছিলেন সঙ্গে আকাশবাণীর ঠিকানা। পরীক্ষা ও অডিশনে পাশ করে জীবনে প্রথমবারের জন্য আকাশবাণীর দরজায় পা রাখলাম। 

এভাবেই কেটে গেল একটি বছর। ছোটমাসি “রবিতীর্থ”-র ছাত্রী। তাকে দিদাই বললেন, আমায় সেখানে ভর্তি করে দিতে।

ভর্তির টাকা, মাসমাইনে তিনিই দেবেন। শুধু তাইই নয়, পরপর দু’বছর ‘গীতবিতান’-এর প্রথম দু’টি খন্ডও তারই কিনে দেওয়া।

সুমিত্রা চট্টোপাধ্যায়, প্রণতি চৌধুরীর পর, চতুর্থ বর্ষে সুচিত্রা মিত্র-র হাতে পড়লাম। ৩৭, পরাশর রোড, কলকাতা-২৬। সঙ্গীতশিক্ষার ঐ শেষ দুটি বছর আমার এই জীবনের একমাত্র বর্ণোজ্জ্বল সময়।

কিইনা পেয়েছি সুচিত্রাদির কাছে। 

কিন্তু এর পরেও তো যুদ্ধ শেষ হয়নি, বরং আরও বেড়েছে। ফিফথ্ ইয়ার ডিপ্লোমা করার পরও, আজ পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো কিছুই করে উঠতে পারিনি।

গান এখনও আমার “প্রাণের আরাম, আত্মার আনন্দ, মনের শান্তি”।

আমি পেশাদারিত্বে বিশ্বাস করিনা, কিন্তু জগতে কিছু করে দেখাতে না পারলে, সেখানেও তো ঠাঁই নেই। আজও গান নিয়ে স্বপ্ন দেখি। ভাবি কখনও সময়, সুযোগ আসবে।

কিন্তু কবে! আমার কাছে কোনও উত্তর নেই। হয়তো ঈশ্বরই বলতে পারবেন।

COPYRIGHT © 2020 SATKAHON

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *