উড়ান অঙ্গন নাট্য উৎসব ২০২৩ | Review | Satkahon

উড়ান অঙ্গন নাট্য উৎসব ২০২৩ | Review | Satkahon
সংস্কৃতিকে হাতিয়ার করেই বাঙালির আজীবনের লোকশিক্ষা।
গানে-কবিতায়-গল্পে-নাটকেই সামাজিক চেতনার বিকাশ।
ঠাকুমার ছড়া হোক কিংবা মাঠের আল ধরে গান গাইতে গাইতে যাওয়া বাউলের একতারা- সব সুরে, সব ছন্দেই যেন মিশে আছে বোধ।
আগামী দিনেও সংস্কৃতির কাঁধেই শিক্ষা-সাহিত্যের বহন ভার…
ঠিক যেমন ভাবে এগিয়ে চলেছে ‘উড়ান’।
২০০৬ সাল থেকে যুব সংগঠন হিসেবে যাত্রা শুরু করে ‘উড়ান’।
প্রতি সপ্তাহে একদিন উড়ান আয়োজন করে পাঠচক্র।
সেই পাঠচক্রের বিষয়বস্তু কখনও সাহিত্যকেন্দ্রিক আবার কখনও সংস্কৃতিকেন্দ্রিক।
মূলত শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে জড়িয়ে ধরেই উড়ান দিয়েছে উড়ান।
লিঙ্গসাম্য নিয়ে বর্তমানে কাজ করছে উড়ান।
নারী, শিশু ও প্রকৃতির সম অধিকারের লড়াইতে সংস্কৃতিকে মাধ্যম করে কাজ করে চলেছে উড়ান।
পত্রিকা, নাটক, সঙ্গীত, কবিতা বিভিন্ন মাধ্যমকে হাতিয়ার করেই সামাজিক নানা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এই সংগঠন।

গত ১২ ও ১৩ অগাস্ট আসানসোলে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিন ব্যাপী উড়ানের অঙ্গন নাট্য উৎসব।
বছর খানেক আগেই ‘নো কার্টেন জার্নি’ নামে অন্তরঙ্গ নাট্য চর্চার সূচনা করে উড়ান।
এই বছর (২০২৩) সেই নাট্য চর্চারই দ্বিতীয় পর্ব আয়োজিত হলো আসানসোলের সব পেয়েছির আসরের মাঠে।
এই উৎসবের উদ্বোধন করেন অঙ্গন নাট্য আন্দোলনের দীর্ঘদিনের যোদ্ধা শ্রীমতি বিশাখা রায়।
শ্রী বাদল সরকারের জীবনসঙ্গী তথা তাঁর নাট্যদলের অন্যতম সৈনিক বিশাখা রায়।
শতাব্দীতে মিছিল, ভোমা ইত্যাদি নাটকে বিশাখা রায়ের অভিনয় আজও মনে রাখার মতো।
তাঁর দর্শন এবং বাদল সরকারের সঙ্গে থিয়েটার যাপনের নাতিদীর্ঘ আলোচনা ছিল উড়ানের প্রথম নাট্য উৎসবের অন্যতম এক সম্পদ।
এই অঙ্গন নাট্য প্রাঙ্গণ উৎসর্গ করা হয় আসানসোলের নাট্যশিল্পী প্রয়াত প্রত্যুষা পানকে।

দুই দিন ব্যাপী এই উৎসবে অংশ নিয়েছিল আসানসোলের ৬টি নাট্যদল।
উৎসবের সূচনায় আসানসোল শীতলা বাউরিপাড়া দলের পড়ুয়ারা উপস্থাপন করেন ‘বোবা কোরাস’।
এছাড়াও নাটক পরিবেশন করেন আসানসোল রেপার্টারি থিয়েটার, বার্নপুর দিশারী, আসানসোল চর্যাপদ, মুক্তভাবনা, এবং আসানসোল কালচারাল ফ্রন্ট।
মানুষের ভালবাসাকে পুঁজি করে আগামী বছরের অপেক্ষা এবং একরাশ নতুন কাজের অনুপ্রেরণা নিয়ে শেষ হয় দুইদিন ব্যাপী উড়ানের অঙ্গন নাট্য উৎসব।